করোনা পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ, মৃতু্য বাড়ছেই

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক কোটির বেশি। করোনা ঠেকানোর সঠিক দিশা পাচ্ছে না কেউ। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পরও এই ভাইরাসের আসল রূপ দেখানো নাকি এখোনো বাকি! এমনটাই বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেসাস বলেছেন, করোনার আক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা এখনো বাকি। ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার সঠিক পদক্ষেপ না নিলে আরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসের শিকার হবে। তার এ মন্তব্য একেবারে অমূলক নয়। কারণ বিশ্বে কিছুদিন আগেও দিনে এক লাখ মানুষ আক্রান্ত হতো। আর এখন আক্রান্ত হচ্ছে দুই লাখের কাছাকাছি। যতই দিন যাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃতু্য বেড়েই যাচ্ছে। বিশ্ববাসীর জন্য এটা এক ভয়াবহ বার্তা। বিশ্বের অনেক দেশ লকডাউন তুলে নেওয়ার কারণে ওইসব দেশে সংক্রমণ বেড়েছে ভয়াবহভাবে। ভবিষ্যতে এই ভাইরাস সংক্রমণ কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। ফলে মানুষের মাঝে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। এখনো সময় আছে, সব দেশের সরকারকে সঠিক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে। মনে রাখতে হবে বেশি বেশি পরীক্ষা, শনাক্ত, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। বিশ্বের সবাই প্রত্যাশা করছে, এই ভয়াবহ পরিস্থিতির অবসান হোক। কিন্তু কঠিন বাস্তবতা হলো, এ পরিস্থিতির অবসান সহজে হচ্ছে না। করোনা মোকাবিলায় অনেক দেশ কিছু কিছু উন্নতি করেছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটি দ্রম্নতগতিতে ছড়াচ্ছে। এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, করোনায় প্রাণহানির দিক দিয়ে সবার ওপরে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। ৫৭ হাজারের বেশি প্রাণহানির নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। সেখানে ৪৩ হাজারের বেশি মারা গেছেন। প্রায় ৩৫ হাজার প্রাণহানি নিয়ে এরপরই আছে ইউরোপের আরেক দেশ ইতালি। এ ছাড়া ক্রমান্বয়ে থাকা অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স (২৯,৭৮১), স্পেন (২৮,৩৪৩), মেক্সিকো (২৬,৬৪৮), ভারত (১৬,৪৭৫), ও ইরান (১০, ৫০৮ জন)। করোনা রোগী শনাক্তের দিক দিয়েও শীর্ষ অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এ পর্যন্ত সাড়ে ২৫ লাখ করোনারোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে হতাশার খবর হচ্ছে, লাতিন আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় দ্রম্নত ছড়াচ্ছে এ ভাইরাস। শনাক্ত রোগী ও মৃত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ এ অঞ্চলে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। তবে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। এই দৃটি দেশেও সংক্রমণ দ্রম্নত গতিতে বাড়ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সামাজিক দূরত্ব একেবারেই মানা হচ্ছে না। দেশের অনেক মানুষই মাস্ক পরছে না। ফলে এখানে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। তবে আক্রান্ত মৃতু্যর পাশাপাশি বিশ্বে সুস্থ হওয়ার হারও একেবারে কম নয়। এই সংখ্যা ৫১ লাখ ৬০ হাজারের মতো। বাংলাদেশে সুস্থতার হার কম- যা উদ্বেগজনক। ছয় মাস আগে এটি চীনে উৎপত্তি হয়- যা ধীরে ধীরে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববাসী সচেতন হলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণের মাত্র কমে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।