ডেঙ্গুর প্রকোপ

সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
নগরীতে ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুভার্ব। আর এ ক্ষেত্রে উৎকণ্ঠার বিষয় হলো, একদিকে নগরবাসী বলছে সিটি করপোরেশন কতৃর্পক্ষ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, অন্যদিকে এ জন্য নগরবাসীর সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন সিটি কতৃর্পক্ষ। মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন সমস্যায় জজির্রত মহানগরীতে অতিষ্ঠ স্বাভাবিক জীবন, রাজধানীর এমন কোনো মহল্লা খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে মশার উৎপাত নেইÑ এমন বিষয় যখন সামনে আসছে, তখন তা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। যা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেই আমরা মনে করি। প্রসঙ্গত, প্রতিবছর মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের বাজেটে বড় বরাদ্দ থাকে। কিন্তু এর সুফল কতটা পাচ্ছে নগরবাসী সেটা নিয়েও তাদের প্রশ্ন আছে। যদিও মশার বিস্তার রোধে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সপ্তাহব্যাপী, পক্ষকালব্যাপী নিয়মিত বিশেষ কাযর্ক্রম হাতে নেয়া হয় কিন্তু তাতেও বাগে আসছে না মশার উৎপাতÑ এমনটি জানা গেছে। আমরা বলতে চাই, এই পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রæত সম্ভব সংশ্লিষ্টদের কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রাজধানী ঢাকায় আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি। এ ছাড়া জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসাব্যবস্থার নানা সংকটের বিষয়টিও পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময়েই সামনে এসেছে। ফলে যেখানে জনসাধারণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের বিষয়, সেখানে ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুভার্ব দেখা দিলে তা যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহাযর্। আমলে নেয়া জরুরি যে, গত বছর চিকুনগুনিয়া রোগে নাস্তানাবুদ হয়েছিলেন রাজধানীবাসী। এ জন্য এবার আগে থেকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসি মেয়র ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। যে বাসায় এডিস মশার লাভার্ পাওয়া যাবে সেখানে ধ্বংস করার পাশাপাশি নাগরিকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। এরপরও এডিস মশার জীবাণু থাকলে ওই বাসার মালিককে সতকর্ করা হবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, এত কিছুর পরও কাজে আসছে না ডেঙ্গুবিরোধী অভিযান। রাজধানীতে নতুন করে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। আরও আশঙ্কাজনক হলো, আস্তে আস্তে তা সবত্রর্ ছড়িয়ে পড়ছে। এটাও আমলে নেয়া দরকার, নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের যতটা না দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী নগরবাসী। কেননা ডেঙ্গু মশা সাধারণত ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, পানির ট্যাংকি, বাসার ছাদে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি বংশবিস্তার করে। ফলে এ ক্ষেত্রে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি বিষয় বলেই প্রতীয়মান হয়। ফলে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করা। যদিও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কাযর্ক্রম হাতে নিলেও নগরবাসী সেটাকে পাত্তা দিচ্ছে না, যে কারণে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গুর প্রাদুভার্ব বেড়ে যাচ্ছে এমন বিষয়ও সামনে আসছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা মনে করি, সাবির্ক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রæত সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। সবোর্পরি বলতে চাই, ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুভার্ব দেখা দিয়েছে এটা আমলে নেয়ার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পযর্ন্ত ডেঙ্গুতে ১১ জন রোগী মারা গেছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী শিশু। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে নগরবাসীকে সচেতন করতে যা যা করার তার সবগুলো কাযক্রর্ম চালানোর পাশাপাশি, ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে নগরবাসীকে বঁাচাতে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।