অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি

চার মাসের শিশুকে হত্যা

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আমরা কিছুতেই রক্ষা করতে পারছি না আমাদের কোমলমতি শিশুদের। তারা নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণ করা হচ্ছে তাদের। এমনকি হত্যার শিকারও হচ্ছে শিশুরা। এই নিষ্ঠুর কাজে আত্মীয়স্বজনসহ মা-বাবাও জড়িয়ে পড়ছে। এটা সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত নজির। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর আদাবরে চার মাস বয়সি এক শিশুকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে আদাবর থানার 'আলিফ হাউজিং' এর পাশের শাকিলের বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে। আয়শা আক্তার সাদিয়া নামের শিশুটি ওই বস্তির শাহজাহানের মেয়ে। শাজাহান পেশায় একজন দিনমজুর। প্রতিদিনের মতো সকালে কাজের খোঁজে বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন শাজাহান। সাদিয়াকে ঘরে রেখে পঞ্চাশ গজ দূরে আরেকটি ঘরে রান্না করছিলেন তার মা। সাদিয়ার আট বছর বয়সি ভাই খেলতে বেরিয়েছিল। ওই সময় কেউ ঘরে ঢুকে সাদিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এই ধরনের বর্বর ঘটনায় নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। মানুষ কতটা নিষ্ঠুর হলে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে তা ভাবতেও অবাক লাগে। এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঠুনকো কারণে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনজনের হাতেও শিশুর জীবন চলে যাচ্ছে। কেবল তাই নয়, আমাদের কোমলমতি শিশুরা অবলীলায় নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অথচ শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজ তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। শিশুর সুস্থ বিকাশ কীভাবে হবে এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের নতুনভাবে ভাবা উচিত। আমরা দীর্ঘদিন থেকে লক্ষ্য করে আসছি, শিশুশ্রম বন্ধের কথা বলা হলেও এ ব্যাপারে কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না, যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। যেভাবেই হোক শিশু নির্যাতন ও হত্যা বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে শিশুশ্রম। বলার অপেক্ষা রাখে না, শিশু হত্যার মতো বর্বরোচিত নিষ্ঠুর ঘটনা এর আগেও বেশ কয়েকটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ না নেয়ার কারণেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এই ধরনের জঘন্য প্রবণতা রোধ করতে না পারলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে অন্যদিকে শিশুরাও থাকবে নিরাপত্তাহীন। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন। এটা ভাবতে বিস্ময় জাগে, কোনোভাবেই আমাদের সমাজ যেন আলোর দিকে অগ্রসর হতে পারছে না, কেবল অন্ধকারে খাবি খাচ্ছে। অবক্ষয় যেমন আমাদের সমাজকে দিন দিন গ্রাস করছে। সামাজিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে। সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার কারণেই মূলত এমনটি হচ্ছে। রাষ্ট্রের মধ্যে শৃঙ্খলা না থাকলে সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। যারা সমাজকে, রাষ্ট্রকে পদে পদে কলুষিত করছে, সমাজকে ভারসাম্যহীন ও দূষিত করে তুলছে, সমাজের মানুষের নিরাপত্তা ও অধিকার ক্ষুণ্ন করছে, বিপন্ন করছে শিশুদের জীবন- তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সামাজিক সুস্থতা আনায়নের পাশাপাশি নতুন সমাজ নির্মাণের জন্য এ ধরনের অপরাধ ও অবক্ষয়কে প্রতিরোধ করতে হবে এবং যে কোনো মূল্যে। এ জন্য ব্যাপকভাবে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন এবং এর কোনো বিকল্প নেই।