স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত গণপরিবহণে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে করোনার মধ্যে গণপরিবহণ চলছে। অথচ স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই রাজধানীর গণপরিবহণে। হেলপার, কন্ডাক্টর ও চালক যেমন মাস্ক পরছেন না, যাত্রীদের বেলায়ও তেমনটাই ঘটছে। সিটে পাশাপাশি দুজনও বসতে দেখা গেছে কোনো কোনো বাসে। বাসে স্প্রে না করা, জীবাণুনাশক দিয়ে বাস পরিষ্কার না করা এসব তো আছেই। সচেতন যাত্রীরা বলছেন, কিছু মানুষের অসচেতনতায় অন্যরাও ঝুঁকিতে পড়ছেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েই চলছে। প্রথম দিকে স্প্রে করা হলেও এখন আর বাসে ওঠার সময় স্প্রে করা হচ্ছে না। করোনাভাইরাসকে স্বাভাবিকভাবে মনে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যাতায়াত করছেন অনেকেই- যা রীতিমতো বিস্ময়কর। অন্যদিকে রাজধানীতে বিশৃঙ্খলভাবে চলছে গণপরিবহণ। অতিরিক্ত যাত্রী, সহকারী দরজায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে গণপরিবহণের বিরুদ্ধে। প্রথম দিকে নিয়ম মেনে চললেও এখন স্বাস্থ্যবিধি মোটেও মানা হচ্ছে না গণপরিবহণে। দরজায় হেলপার গায়ে হাত দিয়ে যাত্রী তোলা করোনার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। গণপরিবহণ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কিন্তু নিয়মিত স্প্রে করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও স্বীকার করেন তারা। কেবল তাই নয়, অনেক বাসে দেখা যায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে আছে, করোনাকালে যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সড়কে প্রতিযোগিতা ও পালস্না দিয়ে চালানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি না মানার পালস্নাও বেশ ভারী। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন এসব হচ্ছে লোক দেখানো। অন্যদিকে সরকার গণপরিবহণের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ালেও দূর হয়নি অনিয়ম। যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। বাসে আগের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দুই মাসেরও বেশি সময় রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সুপারিশে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারির পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত ১ জুন থেকে আবারও চলছে বাস ও অন্যান্য যানবাহন। চালকদের দাবি, ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না। নিতান্তই খুব বেশি প্রয়োজন না হলে গণপরিবহণ এড়িয়ে চলছে মানুষ। জীবন-জীবিকার প্রশ্নে সরকার সাধারণ ছুটি তুলে দিয়ে স্বাস্থ?্যবিধি মেনে সব ধরনের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে। গণপরিবহণে চলাচলের সময় স্বাস্থ?্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কথাও তাতে বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এর ফলে চরমভাবে বেড়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কিছু মানুষ গণপরিবহণ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। জরুরি প্রয়োজনে বাধ্য হয়েই তাদের গণপরিবহণে উঠতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, গণপরিবহণে যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা না হয়, তা হলে সামনে বড় ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া জরুরি। কারণ দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমণ চলছে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৬১৮ জন এবং মারা গেছে দুই হাজার ৯৬ জন। এমন অবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।