বান্দরবানে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা

কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা সামগ্রিক উন্নয়ন ও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের জন্য পরিপন্থি। বলার অপেক্ষা রাখে না, যখন প্রতিনিয়তই একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনাসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে- তখন তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কেননা এ ধরনের অপকর্মকে প্রতিহত করা না গেলে সর্বস্তরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বান্দরবানের বাঘমারায় ঘরে ঢুকে গুলি চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থি অংশের ছয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। তথ্য মতে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে বান্দরবান শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার বাঘমারা এলাকায় এ হত্যাকান্ড ঘটে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি। উলেস্নখ্য, যেখানে হামলা হয়েছে, সেটি জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থি অংশের বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি রতন সেন তঞ্চঙ্গ্যার বাড়ি। তিনি নিজেও এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন। খবরের মাধ্যমে জানা যায়, একদল লোক আসে এবং দুজন ঘরে ঢুকে গুলি শুরু করে। তারা চলে যাওয়ার পর বাড়ির তিন জায়গায় মোট ছয়জনের লাশ পড়ে। আমরা বলতে চাই, যখন ওসি জানিয়েছেন জনসংহতি সমিতির দুই পক্ষের গোলাগুলির খবর পেয়ে তারা এসে মোট ছয়জনের লাশ পেয়েছেন এবং কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হবে; তখন আমরা বলতে চাই, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক একই সঙ্গে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। বলার অপেক্ষা রাখে না, যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। ঘরে ঢুকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে- এমন ঘটনার ভয়াবহতা অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে না। প্রসঙ্গত, আমরা বলতে চাই. প্রতিনিয়ত চারপাশে এমন সব ঘটনা ঘটছে যার ভয়াবহতা যেন আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়। বলা দরকার, এমনটিও জানা গেছে, গত মার্চ মাসে রতন তঞ্চঙ্গ্যাকে সভাপতি করে বান্দরবানে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট জনসংহতি সমিতির সংস্কারপন্থি গ্রম্নপের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আর কমিটি গঠনের পর থেকেই জনসংহতি সমিতির সন্তু লারমা গ্রম্নপের সঙ্গে তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। আর ঘটনার পর বাঘমারা বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। আতঙ্কে স্থানীয়রা অনেকেই নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন, থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বাঘমারা ও আশপাশের এলাকায় এমনটিও খবরে উঠে এসেছে। আমরা মনে করি, সার্বিকভাবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখে যত দ্রম্নত সম্ভব এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা সঙ্গত যে, নানা ধরনের শত্রম্নতা, আধিপত্য বিস্তার, পারিবারিক কলহসহ বিভিন্ন কারণে যখন একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছেই, তখন তা অত্যন্ত ভয়ানক বলেই প্রতীয়মান হয়। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এ ধরনের ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। কেন একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে, কেন মানুষের ভেতর হিংস্রতা, লোভ-লালসা বৃদ্ধিসহ মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলছে এগুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এবারের ঘটনা যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনিভাবে বিভিন্ন সময়ে হত্যাকান্ডের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেননা এভাবে মানুষ হত্যাকান্ডের শিকার হলে তা অত্যন্ত ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সর্বোপরি, এবারের ঘটনাটির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে চাই- সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। একই সঙ্গে লোভ, হিংস্রতা, ক্রোধ থেকে শুরু করে নানা কারণেই যখন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটছে- তখন এই বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে। মনে রাখা দরকার, মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয়, সহনশীলতা কমে যাওয়া কিংবা হিংস্রতা বৃদ্ধি এসব অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।