থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা

সঠিক পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে যাতায়াতজনিত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই এ দেশের মানুষের। কিন্তু ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাগুলো কেন হচ্ছে কারা এর জন্য দায়ী তা শনাক্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ ও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার কারণেই এ দেশের মানুষ আপনজন হারিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে আর নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৯৭টি। এতে নিহত হয়েছেন ৩৬১ জন এবং আহত হয়েছেন ৩৪৮ জন। নিহতদের মধ্যে ৩২ শিশু ও নারী রয়েছে ৫৭ জন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। ১০৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৯৪ জন। এছাড়া দুর্ঘটনায় ৭৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। যানবাহনের চালক ও তার সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৯ জন। আর এ সময়ে ১১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৫৬ জন নিহত ও ২৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ৬টি রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৭ জন। এছাড়াও গত সোমবার দেশের ৫ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভাইসহ প্রাণ গেছে ১৩ জনের। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের সড়ক নিরাপত্তা বলতে যা বোঝায়, তার কিছুই নেই। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মূলত অবৈধ চালক ও চালকের অসতর্কতা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও খামখেয়ালিপনা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও সড়ক-মহাসড়কের ভঙ্গুর অবস্থা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে সরকার অভিযান চালিয়েছে বহুবার। কিন্তু তেমন ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি। রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে ওঠে। ওই দুর্ঘটনায় করা মামলায় যদিও দুই চালক ও এক সহকারীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। দুই বাসের রেষারেষির মধ্যে চাপা পড়ে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃতু্যর ঘটনার পর নতুনভাবে সড়ক নিরাপত্তা আইন করা হয়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সড়ক আইন জনগণের নিরাপত্তার আইন। জনগণের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার আপস করবে না। এ আইন সবার জন্য। রাস্তায় নৈরাজ্য চলতে দেওয়া যাবে না। বাসচালক ও চালকের সহকারীদের খামখেয়ালির কারণে নিরীহ ছাত্রছাত্রীসহ যাত্রীরা প্রাণ হারাচ্ছেন। তাদের কবল থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। চালকদের আরও সতর্ক হতে হবে। একই সঙ্গে চালকরা কোনোভাবেই যাতে হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স নিয়ে ভারী যানবাহন চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশদের আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা বাস্তবে কী দেখতে পাচ্ছি। সড়কে একের পর এক প্রাণ ঝরছে। স্বজন হারানোর কান্না চোখে পড়ছে। সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে সড়কপথে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।