করোনাভাইরাস রোধে উদ্যোগ নিতে হবে

আক্রান্ত পৌনে ২ লাখ ছাড়াল

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরোবিশ্বই বিপর্যস্ত। ব্যাহত হয়েছে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশেও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং এতে মৃতু্য বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌনে দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। আর ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যাও দুই হাজার ছাড়িয়েছে। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের ছোবলে গোটা বিশ্বই যেন এখন মৃতু্যপুরী। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ২২ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৫৪ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। প্রথম মৃতু্য হয় ১৮ মার্চ। আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ইতিমধ্যে ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন করা হয়েছে এবং তা আবার শিথিলও করা হচ্ছে। দেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে ক্রমাগত। সঙ্গত কারণেই এটা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা কতটা! সঙ্গত কারণেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সর্বাত্মক উদ্যোগ জারি রাখার বিকল্প নেই। যেখানে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও সামগ্রিক প্রস্তুতির বিষয় খতিয়ে দেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়। সংশ্লিষ্টদের এটাও মনে রাখা দরকার, একদিকে মানুষ আতঙ্কিত, অন্যদিকে করোনাভাইরাস ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কার্যত পুরো বিশ্বই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। ফলে দেশেও যখন দ্রম্নত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, তখন বিষয়টিকে সহজভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সর্বাত্মক প্রস্তুতি জারি রাখতে হবে। এর পাশাপাশি আগে করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে সচেতন করা ও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য। উলেস্নখ্য, গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহানে নতুন ধরনের একটি ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ নামের এই ভাইরাসটির সংক্রমণকে বিশ্ব মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা মনে করি, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যে কোনো ধরনের অনিয়ম বা গাফিলতি রোধ করতে হবে। বলা দরকার, দেশে করোনা পরীক্ষার নমুনা নিয়েও প্রতারণার বিষয় সামনে এসেছে। এখন পর্যন্ত একে অন্যর সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি বারবার বলা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নমুনা পরীক্ষা নিশ্চিত করতে বলছে। এমন অবস্থায় যদি করোনাভাইরাসের পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার ঘটনা ঘটে, পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দেয় তবে তা কতটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে তা অনুধাবন করতে হবে। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না, করোনার সুযোগ নিয়ে যারা বাণিজ্যে মেতে উঠছে- তাদের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার অনুকম্পা প্রদর্শন নয়, বরং আইন মোতাবেক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। মানুষ যেখানে অসহায় হয়ে পড়ছে, সেই অবস্থার সুযোগ নিয়ে যারা স্বার্থ আদায়ে মরিয়া তাদের ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই। সামগ্রিক বাস্তবতা আমলে নিয়ে করোনা রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা পৌনে দুই লাখ ছাড়াল ফলে এখনই সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করা অপরিহার্য। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিন। এই মহামারি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি ভিন্ন কোনো পথ নেই। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং এতে সৃষ্ট সংকটগুলো যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি প্রত্যেকেই যেন সচেতন হয় সেই বিষয়কে সামনে রেখেও উদ্যোগী হতে হবে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের প্রচেষ্টা জারি রাখবে এমনটি কাম্য।