রোধে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে

বিশ্বব্যাপী বাড়ছে করোনার সংক্রমণ

প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা ভয়াবহ। আর এমন অবস্থার মধ্যেই, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, হঠাৎ করে বিশ্বে করোনার সংক্রমণ দ্রম্নত ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জারি করা লকডাউন উঠে যাচ্ছে দেশে দেশে। আর রেকর্ড সংখ্যায় ভাইরাসটি সংক্রমণ ঘটিয়ে চলেছে মানুষের দেহে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও) জানিয়েছে, শুক্রবার নতুন করে বিশ্বজুড়ে একদিনে ২ লাখ ২৮ হাজার ১০২ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, চলতি মাসের শুরু থেকেই সংক্রমণে হঠাৎ দ্রম্নত ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। জুলাইয়ের প্রথম ১১ দিনের মধ্যে সাতদিনেই দৈনিক নতুন রোগী শনাক্তের হার ২ লাখ ছাড়িয়েছে। বাকি চারদিন ছিল কিছুটা নিচে। তবে গড় হিসাব করলে প্রতিদিন আক্রান্ত হয়েছে অন্তত দুই লাখ মানুষ। সঙ্গত কারণেই বিশ্ব নেতৃত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়। আমরা বলতে চাই, যখন জুলাই মাসেও করোনার গড় সংক্রমণের হার ছিল দেড় লাখের নিচে এবং এরপর দ্রম্নত ঊর্ধ্বগতিতে বাড়ছে তখন তা আমলে নেওয়া জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে, বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতির দিনে দিনে অবনতি ঘটছে। আরও দ্রম্নত বিস্তার ঘটাচ্ছে মহামারি এই ভাইরাস। ফলে বিশ্বের সরকারগুলোকে করোনা প্রতিরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি- তা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি প্রত্যাশিত। আমরা বলতে চাই, বিশ্বে যেমন দ্রম্নতগতিতে করোনা বাড়ছে তেমনি দেশেও দ্রম্নত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশ সংশ্লিষ্টদেরও সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিশ্ব এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি। মহামারি করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিও টালমাটাল। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রত্যেকটি খাত। অন্যদিকে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও ব্যাহত হয়েছে। দীর্ঘদিন অচলাবস্থা চলার পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। কিন্তু কিছুদিন আগেই, বিশ্বে ফের আসছে করোনাভাইরাসের আরও একটি প্রবাহ- এমন আশঙ্কার বিষয়টি সামনে এসেছিল। আর তখন বলা হয়েছিল এ কারণে বন্ধ হবে উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি। তলানিতে ঠেকবে চাহিদাও। আর কাজ হারিয়ে ফের ঘরে ফিরতে হবে লাখ লাখ শ্রমিককে, যা বিশ্বের অর্থনীতির ওপর তীব্র প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা বলতে চাই, এখন যখন দ্রম্নত ঊর্ধ্বগতিতে করোনার সংক্রমণের বিষয়টি আলোচনায় আসছে এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্ব নেতৃত্বকে কঠোর হতে বলছে; তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। বলা দরকার, এমনটিও জানা যাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে সংক্রমণের তুলনায় মৃতু্য অতটা না বাড়লেও মৃতু্যর সংখ্যা একটু একটু করে বাড়তির দিকে যাচ্ছে। গত জুনেও দৈনিক গড়ে দেড় লাখের কম রোগী শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন সাড়ে ৪ হাজারের কিছু বেশি। চলতি মাসে তা যে বাড়তে শুরু করেছে, প্রথম দশ দিনের হিসাবেই তা স্পষ্ট। এ ছাড়া আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো- বাতাসের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়ানোর 'প্রমাণ' যে আসতে শুরু করেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তা স্বীকার করেছে অবশেষে। ফলে সামগ্রিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব ও বিচ্ছিন্নতা জরুরি একই সঙ্গে যথাযথ সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং চিকিৎসা খাতে যেন কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি না হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এই কঠিন সময় মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা সার্বিকভাবে আমলে নিতে হবে এবং করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে ঝুঁকি মোকাবিলায় যথার্থ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। করোনা সংক্রমণের দ্রম্নত ঊর্ধ্বগতি এবং সামগ্রিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ জারি থাকুক এমনটি কাম্য।