বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে

যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে বর্জ্য

নতুনধারা
  ১৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

মানুষের অসুস্থতাজনিত এবং তার চিকিৎসায় মেডিকেল ম্যানেজমেন্টের কারণে উৎপাদিত অপ্রয়োজনীয় বস্তু ও তরল পদার্থসমূহ যেগুলো ফেলে দেয়া হয়, সাধারণভাবে সেগুলোই হলো মেডিকেল বর্জ্য। হাসপাতাল, ক্লিনিক, নার্সিং হোম, ডাক্তারের চেম্বারে এই বর্জ্য সাধারণত উৎপন্ন হয়। বাড়িতে অবস্থানরত রোগীর চিকিৎসাতেও মেডিকেল বর্জ্য তৈরি হয়। কোভিড-১৯ মহামারিকালে মেডিকল বর্জ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কোভিড বর্জ্য। একজন মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়া ও তার চিকিৎসার কারণে কোভিড বর্জ্য তৈরি হয়। মেডিকেল বর্জ্য ও কোভিড বর্জ্যের সমন্বয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের স্বাস্থ্য দুটোই বিপদগ্রস্ত হচ্ছে। মেডিকেল বর্জ্যের কারণে মানুষের যেমন ক্ষতি হয় তেমনি পরিবেশেরও ক্ষতি হয়। সংক্রামক রোগব্যাধি ছড়ানোর একটি অন্যতম উৎস হচ্ছে মেডিকেল বর্জ্য। করোনাকালে মেডিকেল বর্জ্য ও কোভিড বর্জ্যের সমন্বয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের স্বাস্থ্য দুটোই বিপদগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। আমরাও তাই মনে করি।

এটা সত্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষজনকে নানা ধরনের অভ্যাস করতে হয়েছে। মানুষের জীবনযাপনেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। তার একটি হলো সুরক্ষাসামগ্রীর ব্যবহার। রাস্তায় বের হলেই দেখা যায় চারিদিকে প্রায় সবাই সার্জিক্যাল মাস্ক, পলিথিনের হ্যান্ড গস্নাভস, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গস্নাভস, ফেস-শিল্ড, সার্জিক্যাল ক্যাপ, পিপিই এগুলো পড়ে আছেন। কেবল তাই নয়, হাসপাতালের সামনেও এসব স্তূপ হয়ে আছে। এর সচিত্র প্রতিবেদনও গণমাধ্যমে দেখানো হয়েছে। সুরক্ষা বর্জ্য সঠিকভাবে না ফেলা মানে আমরা নিজেরাই একে অপরের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছি। ঢাকা শহরে ব্যাপকভাবে পস্নাস্টিক বর্জ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরনের বর্জ্যের সঠিক ও যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকার ফলে পরিবেশের ক্ষতিসাধন ও পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ দেশের জনগণ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

সাধারণ মানুষ যেভাবে গস্নাভস, মাস্ক বাড়ির অন্যান্য আবর্জনার সঙ্গে ফেলছেন বা রাস্তায় ফেলে দিচ্ছেন সেটা খুবই অবৈজ্ঞানিক। যেহেতু বোঝার উপায় নেই কোনো বাড়িতে কারো করোনাভাইরাস আছে কি না তাই এসব সামগ্রী জীবাণুমুক্ত করে তারপর ব্যাগে ভরে ব্যাগের মুখ বন্ধ করে তারপর ফেলা উচিত। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর হাসপাতাল বর্জ্য কীভাবে ব্যবস্থাপনা হবে সে নিয়ে নির্দেশনা দেয়া হলেও আবাসিক ভবনে তৈরি বর্জ্য কীভাবে ফেলা হবে সে নিয়ে কোনা নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

এসব সামগ্রী ব্যবহারের পর কীভাবে ফেলা উচিত তার নিয়ম রয়েছে। যত্রতত্র ফেলা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাতাসে ছড়াতে পারে, তাই ব্যবহৃত সুরক্ষাসামগ্রী সঠিকভাবে ফেলা দরকার। কাপড়, পস্নাস্টিক ইত্যাদি নানা ধরনের সামগ্রীর ওপর করোনাভাইরাস বিভিন্ন মেয়াদে বেঁচে থাকতে পারে। বিশেষ করে পস্নাস্টিকে এর স্থায়িত্বকাল ২৪ ঘণ্টা বা তারও বেশি। যদিও এই মেয়াদ নিয়ে গবেষকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও দেশীয় বিশেষজ্ঞদের মতে এ ভাইরাস ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি এবং এক জনগোষ্ঠী থেকে অন্য জনগোষ্ঠীতে সংক্রমিত হয়। এমনকি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির ব্যবহৃত ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী থেকেও এ ভাইরাস সংক্রামিত হয়। কিন্তু দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহৃত সুরক্ষাসামগ্রী পিপিই, হ্যান্ড গস্নাভস, সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবস্থাপনা ছাড়াই সাধারণ বর্জ্যের সঙ্গে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। ফলে দিন দিন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। আমরা মনে করি, করোনাকালে এই ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি মেনে নেয়া যায় না। এটা এক ধরনের অপরাধ। এ ব্যাপারে সরকারকে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে বিপদ আরো বাড়বে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<105649 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1