প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন

পোশাকের ক্রয়াদেশ বাড়ছে

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
পুরো বিশ্বই করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে ঘিরে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, দেশেও ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। আর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রত্যেকটি খাত। প্রসঙ্গত বলা দরকার, তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত। এর আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছিল, করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে গত দশকের যে কোনো সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় উলেস্নখযোগ্য হারে কমেছে। কিন্তু সম্প্রতি জানা গেল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পোশাক খুচরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডের আউটলেটগুলো আবার চালু হওয়ায় সীমিত আকারে হলেও দেশের পোশাক কারখানাগুলোতে কাজের ক্রয়াদেশ বাড়তে শুরু করেছে। আর এর ফলে কয়েক মাস আগের চেয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তৈরি পোশাকের উদ্যোক্তা ও শ্রমিকরা। আমরা মনে করি, এটি অত্যন্ত ইতিবাচক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। কেননা, এটা মনে রাখা জরুরি যে, একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে রপ্তানি আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে দেশের প্রধান রপ্তানি খাতের আয় বিবেচনায় যখন পোশাকের ক্রয়াদেশ বাড়ছে তখন বিষয়টি সুখকর। প্রসঙ্গত আমলে নেওয়া দরকার, ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে মার্চে সাধারণ ছুটি শুরুর পর ব্যবসা-বাণিজ্য যে গভীর খাদে পড়েছিল, সেখান থেকে কিছুটা উত্তরণ ঘটেছে। জুন মাসে এসে কোনো কোনো খাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিও হয়েছে। আমরা বলতে চাই, বর্তমান সময়টা অত্যন্ত ভয়াবহ। করোনারভাইরাসের প্রভাবে সবকিছুই বাধাগ্রস্ত হয়েছে। হারিয়েছে জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা। এর মধ্যে পোশাকে ক্রয়াদেশ বাড়তে থাকা ইতিবাচক এখন সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, পরিস্থিতি আমলে নিয়ে এ খাতের সংকট নিরসনে কাজ করা। উলেস্নখ্য, চীন থেকে শুরু হয়ে গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বেশির ভাগ পশ্চিমা দেশ অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিল। দেশগুলোর খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রগুলোও ছিল বন্ধ। এর প্রভাবে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানাগুলো ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতাদেশের কবলে পড়ে। আবার দেশের অভ্যন্তরে করোনা ঠেকাতে কারখানা বন্ধ রাখতে হয় প্রায় এক মাস। এ পরিস্থিতি কাটিয়ে গত ২৬ এপ্রিল থেকে কারখানা সচল হতে শুরু করে। এখন এটা বিবেচনায় রাখতে হবে, কারখানা মালিকরা বলছেন, বাতিল বা স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশগুলোর কিছু ফিরে এসেছে। আবার নতুন ক্রয়াদেশও পেতে শুরু করেছে কারখানাগুলো। কিন্তু তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম। আর ক্রেতারা ধীরে ধীরে ক্রয়াদেশ নিয়ে ফিরে আসায় তাদের বেশির ভাগ কারখানার কাজের সক্ষমতা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই এই খাতের সমস্যা চিহ্নিত করে সেই মোতাবেক উদ্যোগী নিতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না, এর সঙ্গে অনেক পোশাক শ্রমিকের জীবন সম্পর্কিত। ফলে তাদের বিষয়টিকেও আমলে নিতে হবে। আমরা বলতে চাই, আদেশের পরিমাণ কম কিন্তু ক্রয়াদেশ বাড়ছে এটা আশাব্যঞ্জক। যদিও নতুন কাজের আদেশের প্রবাহ এখনো প্রত্যাশিত পর্যায়ে নেই; তারপরও উদ্যোক্তারা আশা করছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি আরও উন্নতি হলে ক্রয়াদেশ প্রত্যাশিত পর্যায়ে বাড়বে। এ ছাড়া উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বড় ইউনিটগুলো কাজের অর্ডার বড় আকারে পেলেও দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাক কারখানাগুলো এখনো সেভাবে পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে বলতে চাই, বিশ্বের এই ভয়াবহ বাস্তবতাকে কাটিয়ে ওঠা সহজ নয়। করোনাভাইরাস সবকিছুকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। সঙ্গত কারণেই এ সময়টাকে বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এর আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলোয় বাতিল হয় একের পর এক ক্রয়াদেশ। অর্ডার না থাকায় কাজ হারায় বহু শ্রমিক। এখন যখন ক্রয়াদেশ বাড়ছে সেটিকে সামনে রেখে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখা দরকার, বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে কার্যত থমকে গেছে পুরো বিশ্বই। ব্যাহত হয়েছে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা। আর মহামারির প্রভাবে মার্চ থেকেই পশ্চিমা বিশ্বে টানা লকডাউনে বিভিন্ন ব্রান্ডসহ সংশ্লিষ্ট মার্কেট বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। পাশাপাশি বন্ধ ছিল বাংলাদেশে কারখানাগুলোও। এখন ক্রয়াদেশ অল্প পরিসরে হলেও বাড়ছে এটিকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে তৈরি পোশাক খাতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসুক এমনটি কাম্য।