চালের দাম

চালবাজি বন্ধ করতে হবে

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
চালের দাম নিয়ে চালবাজি চলছে অনেকদিন থেকেই। এর পেছনে নানা কারণ যুক্ত রয়েছে। কখনো সরকারের পক্ষ থেকে অধিক হারে আমদানি শুল্ক আরোপ, কখনো অসৎ ও অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ী কতৃর্ক চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা। আবার কখনো কখনো চালের দাম বৃদ্ধিতে দায়ী হয় প্রাকৃতিক দুযোর্গও। অবাক ব্যাপার বাজারে একবার চালের দাম বৃদ্ধি পেলে তা আর কমে না। কখনো কখনো কমলেও তার সুবিধা কোনো না কোনো ভাবে বিভিন্ন পযাের্য়র ব্যবসায়ীরাই নিচ্ছেন। দেশের সাধারণ জনগণ এর সুফল ভোগ করতে পারছে না। তিন মাস আগে বাজেট অধিবেশন শুরুর প্রাক্কালে আমদানি করা চালের ওপর ২৮ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণায় সবশেষ প্রতি কেজি চালের দাম বৃদ্ধি পায় ৯ থেকে ১১ টাকা পযর্ন্ত। এই দাম কমার আর কোনো লক্ষণ নেই। এর আগে দেশবাসীকে এমন চড়া দরে চাল কিনতে হয়নি কখনো। মোটা চালের দাম বিশ্বে এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে মোটা চালের দাম নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে চালের দাম বাড়িয়ে বাজার থেকে অতিরিক্ত প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ব্যবসায়ীদের একটি বিশেষ চক্র। এ ধরনের গণবিরোধী অপকমর্ এর আগেও তারা করেছে। এর আগে চিনি ও পেঁয়াজের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। এর দায় কে নেবে? এর প্রধান কারণ এ দেশের অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা প্রতিবছরই নানা অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায়। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। উল্লেখ্য, গত বছর মাচের্র শেষ দিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলের ছয় জেলার ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়। ওই সময় থেকেই বাড়ছে চালের দাম। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, এ দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। ভাতনিভর্র বাঙালি যদি চাহিদামতো চাল কিনতে না পারে কিংবা কিনতে হয় উচ্চমূল্যেÑ তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী? এ দেশে চালের দম বাড়ে, ডালের দম বাড়ে, শাক-সবজি, তেল, লবণ, চিনির দাম বাড়ে। কারণে বাড়ে, অকারণে বাড়ে। যেন দেখার কেউ নেই। চালের দাম বাড়ার কোনো সুফল কিন্তু কৃষকরা পাচ্ছেন না। যারা এ ধরনের গণবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। মূলত এরাই দেশ ও জনগণের শত্রæ। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে অতীতে এদের বিরুদ্ধে কাযর্কর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, এমন প্রমাণ নেই। সরকারকে কঠোরভাবে বাজার তদারকি করতে হবে। বন্ধ করতে হবে ব্যবসায়ীদের কারসাজি। মনে রাখতে হবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার কঠোর না হলে ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নেবে। একদিকে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে কৃষক ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাসাধারণের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকারের কাযর্কর উদ্যোগই কেবল পারে এর সমাধান দিতে।