পাঠক মত

ধর্ষণ প্রতিরোধে চাই আইনের জিরো টলারেন্স নীতি

প্রকাশ | ২৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দিনে দিনে ধর্ষণের মাত্রা সীমাহীনভাবে ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিদিন খবরের কাগজে দেশের কোথাও না কোথাও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের সংবাদ পড়তে হয়। কিছু কিছু সংবাদ পড়ে আমরা শিহরিত হয়ে উঠি। কিছু কিছু সংবাদে আমরা হয়ে যাই হতভম্ব। দুধের বাচ্চারা পর্যন্ত ধর্ষকের লোলুপদৃষ্টি হতে রেহাই পাচ্ছে না। বর্তমানে সব বয়সের নারী ও শিশুরা ধর্ষণের আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে আছে। রাস্তা-ঘাট, যানবাহন থেকে শুরু করে নিজ গৃহে পর্যন্ত নারী ও শিশুরা নিরাপদ নয়। এতেই বুঝা যাচ্ছে, আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা ও মূল্যবোধের কতটা অবনতি ঘটেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের কোনো নারী ও শিশু নিরাপদ নয়। সবার মনেই অজানা আতঙ্ক, কে যে কবে ধর্ষণের শিকার হবে। পত্রিকা অফিসে একটি ধর্ষণের সংবাদ প্রতিবেদন লিখে শেষ হওয়ার আগেই আরো একটি ধর্ষণের সংবাদ চলে আসে। তবে অধিকাংশ ধর্ষণের সংবাদ চাপা পড়ে যায়। জনমনে একটাই কথা, এভাবে আর কত দিন চলবে, এর প্রতিকার কোথায়? বাংলাদেশে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও তিন থেকে চারটি ধর্ষণের মতো ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। তন্মধ্যে অতি অল্প কিছু নির্যাতনের ঘটনায় সীমিত বা ব্যবহৃত পরিসরে নিয়মিতভাবে আন্দোলন হচ্ছে। তবুও দেশে ধর্ষণের ঘটনা কমছে না, বরং দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে যে হারে ধর্ষণের মতো অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, তার অতি নগণ্য পরিমাণ বিভিন্ন তথ্যে উঠে আসছে। প্রকৃত চিত্র অনেক বেশি ভয়াবহ। অধিকাংশ ধর্ষণজনিত ঘটনা প্রভাব খাটিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে ধামাচাপা দেয়া হয়। আবার অনেকেই আছে, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পরও সামাজিকভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার ভয়ে এই বিষয়ে মুখ খুলতে চায় না। সর্বোপরি, ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করার পর বিভিন্ন আইনি জটিলতা ও হয়রানির কথা চিন্তা করে অনেকেই মামলা করা হতে বিরত থাকে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার মতে, ধর্ষণের মতো অপরাধ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে আইনের সঠিক প্রয়োগ না হওয়া। এছাড়া অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সর্বস্তরের মানুষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ করে। সামাজিকভাবে ধর্ষণের মতো অপরাধ অতি ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচ্য। তবু দিনে দিনে লাগামহীনভাবে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। আর আইনের চোখে বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে ধর্ষক বুক ফুলিয়ে সমাজের ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে করে জনমনে প্রশ্ন উঠে, ধর্ষণ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টরা কতটা আন্তরিক? তাই আমরা প্রত্যাশা করি, সরকার এই বিষয়ে আরো অধিক কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। প্রত্যেক ধর্ষকের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে ধর্ষণের পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে। সৈয়দ আসাদুজ্জামান সুহান মালিবাগ, ঢাকা