থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা

পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশ | ২৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাকালেও দেশে যাতায়াতজনিত দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই এ দেশের মানুষের। কিন্তু ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাগুলো কেন হচ্ছে কারা এর জন্য দায়ী তা শনাক্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ ও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার কারণেই এ দেশের মানুষ আপনজন হারিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে আর নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, কুমিলস্নায় ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে ভাইবোনসহ চারজন নিহত হয়েছেন। জেলার বুড়িচং উপজেলার হরিণধারা এলাকায় সিলেট-কুমিলস্না সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের নবী নেওয়াজের ছেলে বিলস্নাল ভূঁইয়া, মেয়ে রিপা আক্তার, পিকআপ চালক ওসমান গণি ও তার সহকারী মুরাদনগরের সাজিদ। এছাড়া এ ঘটনায় পিকআপের আরও পাঁচ যাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ দুর্ঘটনায় পড়া পিকআপ ও ট্রাক জব্দ করেছে। ঘটনার পর থেকে ট্রাকচালক পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা মনে করি, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মূলত অবৈধ চালক ও চালকের অসতর্কতা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও খামখেয়ালিপনা, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও সড়ক-মহাসড়কের ভঙ্গুর অবস্থা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে সরকার অভিযান চালিয়েছে বহুবার কিন্তু তেমন ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি। রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় ছাত্ররা রাস্তায় নেমে পড়ে। নিজেরাই ট্রাফিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় দুই চালক ও এক সহকারীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। দুই বাসের রেষারেষির মধ্যে চাপা পড়ে রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃতু্যর ঘটনার পরে সড়ক আইন পরিবর্তন করা হয়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সড়ক আইন জনগণের নিরাপত্তার আইন। জনগণের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার আপস করবে না। এ আইন সবার জন্য। রাস্তায় নৈরাজ্য চলতে দেওয়া যাবে না। বাসচালক ও চালকের সহকারীদের খামখেয়ালির কারণে নিরীহ ছাত্রছাত্রীসহ যাত্রীরা প্রাণ হারাচ্ছেন। তাদের কবল থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। চালকদের আরও সতর্ক হতে হবে। একই সঙ্গে চালকরা কোনোভাবেই যাতে হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স নিয়ে ভারী যানবাহন চালাতে না পারেন, সে ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশদের আরও কঠোর ও দায়িত্বশীল হতে হবে। সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারি কোনো কাজে আসেনি। রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর রাজীবের মৃতু্যর ঘটনা এখনো মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। ওই সময়ে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীতেও। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে অনেক লেখালেখি প্রতিবাদ আন্দোলন হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। করোনাকালেও সড়ক মহাসড়কে নৈরাজ্য চলছে কোনো রকম প্রতিকারহীনভাবে। দ্রম্নত এর অবসান হওয়া জরুরি। সরকারের পরিকল্পিত কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে।