পাঠক মত

আদম ব্যবসায়ীদের রুখতে হবে

প্রকাশ | ৩০ জুলাই ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আদম ব্যবসায়ীরা জাতির শত্রম্ন! সেই আদিম যুগ থেকে মনুষ্যজাতি বহু ধাপে আজকের সভ্যতার যুগে এসেছে। অসভ্য বিশ্বকে সভ্য করতে উঠেছে প্রাসাদ নেমেছে প্রযুক্তি। পিছনে ফিরলে দেখা যায়, বাংলাদেশ সত্তরের দশক থেকেই জনশক্তি রপ্তানি করছে? শুরু থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তারপর আস্তে আস্তে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়? আর এই মধ্যেপ্রাচ্যই হলো আদম ব্যবসায়ীদের উর্বর কর্মক্ষেত্র। নানা প্রতারণার জালে প্রতারিত করে সর্বস্বান্ত করা এসব আদম ব্যবসায়ীদের প্রধান কাজ। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বু্যরোর হিসাব অনুযায়ী, ১৬২টি দেশে প্রায় এক কোটির কাছাকাছি বাংলাদেশি কর্মী আছেন? প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো বড় মাধ্যম হলো আদম ব্যবসায়ীরা। তবে এসব আদম ব্যবসায়ীর অনেকেই ঘুষ-দুর্নীতি, অর্থ পাচারের মতো বহু অপরাধে জড়িত। যা দিনকে দিন বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আদম ব্যবসায়ী সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল গত ৬ জুন ধরা পড়ে কুয়েতে। তিনি তার পদবির আড়ালে অসহায় শ্রমিকদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন তার সবই কুয়েত সিআইডির কাছে জবানবন্দি দেয় ভুক্তভোগী প্রবাসী শ্রমিকরা। যে ১১ জন তার বিরুদ্ধে সাক্ষাৎ দিয়েছেন তাদের ভাষ্যমতে প্রতিদিন উপার্জনের একটি অংশও দেওয়া লাগতো তাকে। ভিসা নবায়ন তাদের অন্যতম হাতিয়ার। নবায়ন করতে হলে কমিশন দিতে বাধ্য। তবুও দিনশেষে অসহায় শ্রমিকদের অবস্থান হয় বৈদেশিক গারদে। তখন তার পরিবার আত্মীয়-স্বজনের অবস্থা কেমন হয় কেউ না দেখলে বোঝা মুশকিল। কিন্তু কেউ একটু বুঝতে চেষ্টা করে কোনো কারণে সে জেলে গেল বা কেনইবা যাওয়ার ২ মাসের ভিতরই দেশে আসতে হলো! তার দোষের সিংহভাগই যে আদম ব্যবসায়ীর তা অনেকের কাছেই অজানা। প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে একটা অংশ থাকে নারী। এবং তাদের অধিকাংশই আদম ব্যবসায়ীনির্ভর। আর ফলাফল হাতে-নাতে, বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরতে হয় তাদের। প্রশাসন বেশ কয়েকবার এটা নিয়ে কঠোর হলেও নিঃশেষ হয়ে যায়নি এসব নির্যাতনের ধারা। মূলত আদম ব্যবসায়ীরাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই নির্যাতনের জন্য দায়ী। এক-একটা অসৎ ঘটনা বাংলাদেশিদের বিশ্ব দরবারে খুব নিচু করে দেয়। কমে যায় শ্রমিকদের ডিমান্ড, এমনকি একই কাজ করে অন্য দেশের শ্রমিকরা পান দ্বিগুণ বেতন। দিনশেষে রেমিট্যান্স যা আসে তার চেয়ে জীবন-যৌবন প্রায় সবই চলে যায় এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের। সম্প্রতি এরকম আদম ব্যবসায়ী এমপি পাপুলের কৃতকর্ম সারা বিশ্বে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। যা কুয়েতের শ্রমবাজারসহ পুরো বিশ্বের বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের ভোগান্তির পরিমাণ খুব কম। তা ছাড়া আদম ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে যারা নদীপথসহ বিভিন্নভাবে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে, তাদের অনেকেই হচ্ছে লাশ নইলে বইতে হচ্ছে ভয়াবহ কাজ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি না থাকলে হয়তো অকালেই ভাটা পড়বে বিশ্ব শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের চাহিদা, অপূরণীয় ক্ষতি হবে প্রিয় স্বদেশের। আবু জাফর ঢাকা