খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাস বিপর্যয়ের বাস্তবতায় বিশ্বজুড়ে অভাবী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে দুর্যোগকালে খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষগুলোর বেশিরভাগই নিম্ন এবং মধ্যআয়ের দেশগুলোর বাসিন্দা। দৈনিক মজুরি পেলে খাওয়া সম্ভব হয় এমন লাখ লাখ মানুষের জন্য এই মহামারি মারাত্মক বিপর্যয়কর। করোনাকালে বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা মন্দায় ইতোমধ্যে অনেকের সামান্য সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে এই বিপর্যয় সামাল দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এটা সত্য, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা ইত্যাদি হলো একজন স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিকের মৌলিক অধিকার। একটি দেশকে সঠিকভাবে উন্নত করতে চাইলে সবার আগে সেই দেশের জনগণের খাদ্যের নিরাপত্তা দান করতে হবে। খাদ্য ছাড়া মানুষ অচল। তাই এই খাদ্যের নিরাপত্তার জন্য সরকারকে সচেতন হতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা বলতে এটি জনগণের বছরে যে পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন তা দেশের মজুদ থাকাকে বোঝায়। দেশে 'খাদ্য নিরাপত্তা' একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উৎপাদন করেই হোক কিংবা আমদানি করেই হোক, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। খাদ্যের সঠিক নিরাপত্তা যদি রক্ষা করা না হয়, তাহলে একটি দেশ সুস্থ-সবল জাতি পাবে না। বিদ্যমান বাস্তবতায় করোনাকালে ক্রমবর্ধমান অপুষ্টির পরিণতি হবে দীর্ঘমেয়াদি। এটি একটি প্রজন্মকে বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। বার্তা সংস্থা এপি'কে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। জাতিসংঘ বলছে, করোনাভাইরাস এবং এ ভাইরাসকেন্দ্রিক নানা বিধিনিষেধের ফলে ক্ষুধার্ত জনগোষ্ঠী এমনিতেই খাদের কিনারায় গিয়ে পৌঁছেছে। ক্ষুদ্র খামারগুলো বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং গ্রামগুলো খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিস্নউএফপি) জানায়, করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায় চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা এই বছর দ্বিগুণ বাড়তে পারে। এ বছর ১৩ কোটি মানুষ নতুন করে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে পারে। ইতিমধ্যে এই সংকটে মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি ৫০ লাখ। পর্যটন রাজস্ব হারানো, প্রবাসীদের আয় পাঠানো কমে যাওয়া এবং ভ্রমণ ও মহামারি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিধিনিষেধের কারণে আয় কমে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা মন্দায় ইতিমধ্যে তাদের সামান্য সঞ্চয় শেষ হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এই বিপর্যয় সামাল দিতে সবকাইকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বর্তমানে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষগুলোর বেশিরভাগই নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোর বাসিন্দা। খাদ্য সংকটবিষয়ক বৈশ্বিক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৯ সালে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা সবচেয়ে বেশি মানুষ সংঘাতকবলিত দেশের। এদের সংখ্যা প্রায় সাত কোটি ৭০ লাখ। এর পরেই রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সংকটে পড়া মানুষ। তাদের পরিমাণ তিন কোটি ৪০ লাখ। এছাড়া অর্থনৈতিক সংকটে পড়া আরও দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে। আমরা মনে করি, এই সংকট দূর করতে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।