করোনা সংক্রমণের ৫ মাস যথাযথ উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ০৮ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ৫ মাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে আড়াই লাখে। আর ইতালিকেও ছাড়িয়ে বিশ্বে করোনা সংক্রমিত দেশের তালিকায় ১৫তম স্থানে এখন বাংলাদেশ। প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দেশে মারা গেছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ। উলেস্নখ্য, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃতু্যর ঘটনা ঘটে। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, এখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ইতিমধ্যে ছড়িয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। কার্যত বিশ্ব থমকে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেমন লকডাউন করা হয়েছে এবং তা আবার শিথিলও করা হয়েছে। আর দেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, করোনা রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সর্বাত্মক উদ্যোগ জারি রাখার বিকল্প নেই। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও সামগ্রিক প্রস্তুতির বিষয় খতিয়ে দেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের এটা মনে রাখতে হবে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কার্যত পুরো বিশ্বই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দিশাহারা। ফলে দেশেও যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা যখন আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গেছে তখন বিষয়টিকে সহজভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সর্বাত্মক প্রস্তুতি জারি রাখতে হবে। এর পাশাপাশি আগে করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে সচেতন করা ও যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া অপরিহার্য। উলেস্নখ্য, গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহানে নতুন ধরনের একটি ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ নামের এই ভাইরাসটির সংক্রমণকে বিশ্ব মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে থমকে গেছে মানুষের জীবন। অর্থনীতিসহ প্রায় প্রত্যেকটি খাতেই বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে এমনটিও জানা যাচ্ছে, সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ও আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বর্তমান অপরিকল্পিত অবস্থা অব্যাহত থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশেও দ্বিতীয়বার করোনার বড় ধরনের ঢেউ লাগা অনিবার্য। ফলে বিষয়টি আমলে নিতে হবে। এ ছাড়া সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার বাংলাদেশে নিম্নমুখী করার কোনো উদ্যোগ নেই। সংগত কারণে এর তীব্রতা বৃদ্ধি না পাওয়ারও কোনো কারণ নেই। এখন যা দরকার তার কিছুই হচ্ছে না এমনটিও আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি, যখন এমনটা উঠে আসছে, যতটা পরীক্ষা হওয়া দরকার ছিল তা হচ্ছে না। বরং কমেছে। লকডাউনও হচ্ছে না- ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, করোনার ৫ মাস অতিবাহিত হলেও নিম্নগামী হচ্ছে না। অন্যদিকে চীন খুব কম সময়ে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করেছে বলেও জানা যায়, অথচ চীন থেকেই করোনাভাইরাসের শুরু হয়। জানা গেছে, চীন ট্রেসিং, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন এবং লকডাউনের মতো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ায় করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। ফলে আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলো সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। কারণ ট্রেসিং, আইসোলেটেড, কোয়ারেন্টিন, আইডেন্টিফাই- এগুলোর কোনোটাই সঠিকভাবে হচ্ছে না- এই বিষয়গুলো যখন সামনে আসছে, তখন তা আমলে নিতে হবে। অন্যদিকে লোকজনের মাস্ক পরা কমে যাচ্ছে, অফিস-আদালত খুলে যাচ্ছে, পরিবহণও চলছে। ফলে এসব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখবে এমনটি কাম্য।