নেত্রকোনায় নৌকাডুবি দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা জরুরি

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে এবং দুর্ঘটনায় মৃতু্যও কিছুতেই রোধ হচ্ছে না। যা স্বাভাবিকভাবেই ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। চালকদের অদক্ষতা, নানা ধরনের অনিয়ম, প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতাসহ বিভিন্নভাবেই দুর্ঘটনা ঘটে- যা সন্দেহাতীতভাবেই অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, নেত্রকোনার মদনে হাওড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ডুবে মারা যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ময়মনসিংহের একই পরিবারের ৮ জন ছিলেন। উলেস্নখ্য তথ্য মতে, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নেত্রকোনার মদনের উচিতপুরের সামনের হাওড় গোবিন্দশ্রী-রাজালীকান্দা এলাকায় এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার সকালে ময়মনসিংহ সদর থানার ৫ নম্বর চরসিরতা ইউনিয়ন ও আটপাড়া তেলিগাতী থেকে প্রায় ৪৮ জন মিনি কক্সবাজার উচিতপুরে ঘুরতে যায়। পরে হাওড়ের উত্তাল ঢেউয়ে গোবিন্দশ্রী-রাজালীকান্দা একালায় নৌকা ডুবে যায়। আমরা বলতে চাই, যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি এবং নৌ যাতায়াত বা ভ্রমণে ক্ষেত্রে ত্রম্নটিমুক্ত ইঞ্জিন, নিয়ম-নীতি মেনে চলাসহ সামগ্রিক সতর্কতা অপরিহার্য। বলার অপেক্ষা রাখে না, ভ্রমণে নৌকাডুবি শুধু নয়, যাত্রীবাহী লঞ্চসহ নানা স্থানে লঞ্চ দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এর আগে ঢাকার শ্যামবাজারের কাছে বুড়িগঙ্গা নদীতে এক লঞ্চের ধাক্কায় আরেকটি ছোট লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পর ৩০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। আমরা বলতে চাই, যখন একের পর এক ভয়াবহ ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছেই তখন সৃষ্ট পরিস্থিতি কতটা বেদনার এবং আশঙ্কাজনক তা আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। বলা দরকার, বিভিন্ন সময়ে ভয়াবহ নৌদুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে যথারীতি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা থামেনি। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে আমরা বলতে চাই, অদক্ষ চালক, ত্রম্নটিপূর্ণ বা ফিটনেসবিহীন যান, নির্মাণ ত্রম্নটি, ধারণক্ষমতার বেশি মানুষ কিংবা মালবহন ইত্যাদি নানা ধরনের অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে বিভিন্ন সময়েই- যা কঠোরভাবে নিযন্ত্রণ করা অপরিহার্য। যথাযথ নিয়মকানুন অনুরসণ করে যেন লঞ্চ পরিচালিত হয় এটা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। দুর্ঘটনা এড়াতে অতীত দুর্ঘটনা থেকেও শিক্ষা নিতে হবে। এটা ভুলে যাওয়া যাবে না, দেশের যোগাযোগ, যাতায়াত ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বড় একটা মাধ্যম হচ্ছে নৌপথ। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না- জলপথে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হলেও নিরাপত্তার বিষয়টি এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, নৌপথে বড় জাহাজ ছাড়াও ছোট ছোট প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মনীতি মানা হয় না এমন অভিযোগ আছে। অধিক মাল ও যাত্রী নিয়ে প্রতিযোগিতাসহ নানা ধরনের অনিয়মের বিষয়টি বারবার সামনে এসেছে। এবারের দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা গেছে, হাওড়ের উত্তাল ঢেউয়ে গোবিন্দশ্রী-রাজালীকান্দা একালায় নৌকাটি ডুবে যায়। এটিকে সামনে রেখেও ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। এই দুর্ঘটনাসহ এর আগে বিভিন্ন সময়ের দুর্ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা ও আইনবিধি পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত করা জরুরি। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, নৌপথের যাতায়াত ভ্রমণসহ সব ধরনের চলাচলে সতর্কতামূলক পদেক্ষপ নিশ্চিত করতে হবে এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখতে হবে। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে ঘুরতে বের হওয়া বা ভ্রমণে যেমন সতর্কতা জরুরি, তেমনি অগণিত মানুষের নিরাপদ যাতায়াত ও সুষ্ঠু ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখার স্বার্থে নৌপথের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।