পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশ এ অর্জন ধরে রাখতে হবে

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনা মহামারিকালে একটি সংবাদ আমাদের আশাবাদী করে তোলে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বরাবরের মতো প্রথম স্থানে রয়েছে চীন। আর বাংলাদেশ থেকে একধাপ নিচে অর্থাৎ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রধান প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডবিস্নউটিও) সম্প্রতি প্রকাশিত 'ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটিসটিক্যাল রিভিউ-২০২০' প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে মূলত ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু একক দেশ হিসাব করলে দ্বিতীয় বাংলাদেশ। একক দেশ হিসেবে ২০১৯ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে চীন। তবে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে দেশটির পোশাক রপ্তানি ৬০০ কোটি ডলার কমে ১৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার হয়েছে। বাজারে তাদের অংশীদারিত্ব ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ। একক দেশ হিসেবে পোশাক রপ্তানিকারক দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশ তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলারের (প্রকৃতপক্ষে তিন হাজার ৩০৭ কোটি ডলার) পোশাক রপ্তানি করেছে। বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১০ সালে ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমরা বাজার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। তবে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি বাজারে টিকে থাকতে হলে পণ্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনতে হবে। আমরাও তাই মনে করি। এ জন্য বর্তমান চাহিদা ও আগামীর সম্ভাবনার ওপর জোর দিয়ে সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা দিতে হবে। তাহলে রপ্তানি বাড়িয়ে অবস্থান ধরে রাখা সম্ভব হবে। \হসরকার অবশ্য এ ব্যাপারে তৎপর ও মনোযোগী। করোনাকালে সরকার এই শিল্পটির পাশে দাঁড়িয়েছে। রপ্তানিমুখী এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তা সত্ত্বেও তৈরি পোশাক কারখানায় বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে- রয়েছে নানা ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা মনে করি, এসব অনিয়ম অসন্তোষ দূর করতে হবে। পাশাপাশি তাদের নিয়মিত বেতন পরিশোধ করতে হবে। করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা যাবে না। তা হলে এটা 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' হবে। কারখানা মালিকদের মানবিক দিক বিবেচনা করে শ্রমিকদের প্রতি সদয় হওয়া জরুরি। কারণ এই মহামারিকালে কেউ কর্মহীন হলে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। এই সময়ে কারখানার মালিকদের নিষ্ঠুর হলে চলবে না। বাস্তবতার নিরিখে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তৈরি পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে, দেশের সুনাম কুড়িয়ে এনেছে। এখাতে দেশের লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিশেষ করে নারীরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে এই শিল্পের মাধ্যমে। পাশাপাশি মালিকরা যে বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন এদেরই ত্যাগ আর অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে। যাদের শ্রমে-ঘামে এই শিল্প দাঁড়িয়ে আছে, বিশ্বে নন্দিক হয়েছে, তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বা সুরক্ষাসহ চাকরির নিরাপত্তা মালিকদেরই নিশ্চিত করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।