আরও ৪ পিলারের নকশা চ‚ড়ান্ত

পদ্মা সেতুর কাজ যথাসময়ে শেষ হোক

প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দ্রæত এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, সেতুর ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ নম্বর পিলারের নকশা চ‚ড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। আর সমাধান পাওয়া এসব পিলারে যে পদ্ধতি ব্যবহৃত হবে, তা দেশে প্রথম এবং বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি সেতুতে হয়েছে। অন্যদিকে বাকি ৬, ৭, ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ নম্বর পিলারের চূড়ান্ত নকশা অক্টোবরের মধ্যে আসবে বলে আশাবাদী প্রকৌশলীরা। এ ছাড়া নদীতে যে পাইল বসবে তার ১৬৯টি পাইল ড্রাইভও সম্পন্ন হয়েছে। আমরা মনে করি, দ্রæত পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলেছে বলে যখন জানা যাচ্ছে, তখন তা অত্যন্ত ইতিবাচক। প্রসঙ্গত বলা দরকার, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয়েছিল পদ্মা সেতু। এরপর এ বছরের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান। গত ১১ মাচর্ ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। এরপর ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর খুঁটির ওপর চতুথর্ স্প্যান বসানো হলে সেতুর ৬০০ মিটার দৃশ্যমান হয়। ২৯ জুন নদীর দক্ষিণ প্রান্তে ৪১ ও ৪২ নম্বর খুঁটির ওপর স্প্যান বসানো হয়। ১৫০ মিটার দীঘর্ সেই স্প্যানটি ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের (খুঁটি) ওপর বসানো হওয়ায় পদ্মা সেতুর ৭৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়। উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় কাজ পিছিয়ে পড়েছিল। তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি কাজ শেষ করতে ২০২১ সাল পযর্ন্ত সময় চেয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কাছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, একটা সময়ে পদ্মা সেতু নিয়ে নানা ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলেও আজ আর এই সেতু স্বপ্নে আটকে নেই, যা সামগ্রিকভাবেই ইতিবাচক। সঙ্গত কারণেই সাবির্ক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, যথাসময়েই সেতুর কাজ যেন শেষ করা সম্ভব হয়, সেই প্রচেষ্টাকে সামনে রেখে কাযর্কর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা। আমরা বলতে চাই, সেতুর কাজ এগিয়ে চলেছেÑ ফলে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, কোনোভাবেই কাজে যেন ধীরগতি বা বাধাগ্রস্ত না হয়। কেননা যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারার দরুন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকে, যা কাম্য নয়। কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে নিদির্ষ্ট সময়েই পদ্মা সেতুর কাজ যথাযথভাবে শেষ হবে এমনটি কাম্য। উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও এই সেতু নিয়ে নানা ধরনের বিলম্ব প্রক্রিয়া চলতে থাকে। ২০১১ সালে দুনীির্তর অভিযোগ তোলে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের দেখাদেখি অন্য দাতাসংস্থাগুলো এক এক করে মুখ ফিরিয়ে নেয়। সৃষ্টি হয় নানা ধরনের আশঙ্কা। সব আশঙ্কা দূর করে এবং সব বাধা মোকাবেলা করে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বরে ১১টা ১৬ মিনিটে মুহুমুর্হু করতালির আওয়াজের সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রলিক হ্যামারে নদীর তলদেশের গভীর থেকে গভীরে প্রোথিত হতে থাকে পদ্মা সেতুর মূল পাইল। এর পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি, এগিয়ে চলেছে পদ্মা সেতুর নিমার্ণকাজ। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, পদ্মা সেতুর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সামগ্রিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, সেতুটির নিমার্ণকাজ শেষ হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে সরাসরি যুক্ত হবে রাজধানী ঢাকা। তাই যথাসময়ে সেতুর কাজ শেষ হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।