করোনার সংক্রমণ ২ কোটি ছাড়াল সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি

প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্ব এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। শক্তিধর দেশগুলোকেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। ফলে দিনে দিনে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বিশ্বনেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, এরই মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা 'ওয়ার্ল্ডোমিটার'-এর এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৪৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে মারা গেছে ৭ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ। যদিও এটা আশাব্যঞ্জক বিষয় যে, করোনা থেকে সুস্থতার হারও কম নয়। জানা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছে। করোনা থেকে সুস্থতার সংখ্যা এক কোটি ২৯ লাখের বেশি। প্রসঙ্গত বলা দরকার, গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে তান্ডব চালাচ্ছে এই ভাইরাস। করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সব অঙ্গরাজ্যেই করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সংক্রমণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। অন্যদিকে, তৃতীয় অবস্থানে আছে ভারত। আমরা বলতে চাই, যখন করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে, তখন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাসহ বিশ্বের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঠিক রাখতেও উদ্যোগী হতে হবে। কেননা এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল, মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খেয়েছে। ফলে কোথাও যেন দুর্বল স্বাস্থ্য সেবাব্যবস্থা ও নাজুক প্রস্তুতি না থাকে সেই দিকটি আমলে নেওয়াসহ করোনা রোধে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, মানুষের মধ্য আতঙ্ক আছে যেমন, তেমনিভাবে জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের প্রত্যেকটি খাতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর আগে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্ব ব্যাপক দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে আছে বলেও সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ। একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বই বিপর্যস্ত, অন্যদিকে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি- সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে বিশ্ব এমন এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে যা মোকাবিলায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। আর এ ক্ষেত্রে যত দ্রম্নত সম্ভব বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের করোনা রোধে যেমন ভূমিকা রাখতে হবে, তেমনি অভাবী মানুষ বা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির বিষয়টি নিয়েও ভাবতে হবে। বিশ্বে যখন দুই কোটি আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল তখন আমরা বলতে চাই, শুধু অন্যান্য দেশেই নয়, বাংলাদেশেও দ্রম্নত বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। দেশেও করোনাভাইরাস আর একস্থানে সীমাবদ্ধ নেই। ইতোমধ্যে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এ ছাড়া মারা গেছে ৩ হাজারের বেশি মানুষ। ফলে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। একদিকে দেশের জনসংখ্যা বেশি, অন্যদিকে প্রস্তুতি কতটা এবং মানুষের সচেতনতার চিত্র আমলে নিয়ে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। বলা দরকার, সারা বিশ্বে যখন সংক্রমণ বাড়ছে তখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন করা হলেও তা শিথিল করা হচ্ছে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে। করোনা রোধের উপায় খুঁজতে যেমন নানাধরনের প্রচেষ্টা চলছে, তেমনি এর প্রভাবসংক্রান্ত নানা বিষয়ে গবেষণাও হচ্ছে। আমরা মনে করি এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, ফলে বিষয়টিকে সহজ করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সারা বিশ্বের করোনা-পরিস্থিতি বিশ্লেষণ সাপেক্ষে বিশ্বনেতৃত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতা এ সময়টা সবচেয়ে বেশি জরুরি। সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন হোক এমনটি প্রত্যাশিত।