রক্ত পরীক্ষায় শনাক্ত হবে ক্যান্সার

গবেষণা টিমকে অভিনন্দন

প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ। ফলে জনসাধারণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের বিষয়। সঙ্গত কারণেই যদি রোগ শনাক্তকরণের পদ্ধতি সহজ হয়, তাও আবার ক্যান্সারের মতো রোগে, তবে নিশ্চিতভাবেই তা ইতিবাচক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, শুধু রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই আগে থেকে শনাক্ত করা যাবে ক্যান্সার। আরও সুখকর বিষয় হলো, এই পরীক্ষায় খরচ হবে সবোর্চ্চ ৫০০ টাকা আর সময় লাগবে মাত্র পঁাচ মিনিট। এ ছাড়া ক্যান্সার শনাক্তকরণে অন্য যে কোনো পরীক্ষার চেয়ে এই পদ্ধতি সহজ ও অনন্য। এমনকি কারও রক্তের অন্য কোনো পরীক্ষা করার সময়ও সহজেই জানা যাবে তার ক্যান্সার আছে কিনা। আগামী এক বছরের মধ্যে এই প্রযুক্তির ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজ্ঞানের এই যুগান্তকারী সাফল্যের সূচনা ঘটিয়েছেন বাংলাদেশের এক দল বিজ্ঞানী। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষক-শিক্ষাথীর্রা ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই কৃতিত্বপূণর্ গবেষণা চালিয়ে অসাধারণ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তজাির্তক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শাবিপ্রবিতে উদ্ভাবিত ক্যান্সার শনাক্তকরণ প্রযুক্তি সম্পকের্ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে ২৫ সদস্যের গবেষণা টিম কাজ করে। যার নেতৃত্বে ছিলেন শাবিপ্রবির পদাথির্বজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক। আমরা বলতে চাই, শাবিপ্রবিতে উদ্ভাবিত ক্যান্সার শনাক্তকরণ প্রযুক্তি সম্পকের্ যে বিষয়টি সামনে এলো তা অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ এবং এই যুগান্তকারী সাফল্যের সূচনা ঘটানোর জন্য তাদের আমরা অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে যখন এমন বিষয় জানা যাচ্ছে যে, আগামী এক বছরের মধ্যে এই প্রযুক্তির ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব হবেÑ তখন তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হোক এমনটি প্রত্যাশিত। জানা গেছে, ২০১৬ সালের মাচর্ মাসে ‘নন-লিনিয়ার অপটিকস ব্যবহার করে বায়োমাকার্র নিণর্য়’ শীষর্ক প্রকল্পটি উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের প্রকল্প হেকেপের আওতায় গৃহীত হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সহায়তায় হেকেপ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রথমেই শাবিপ্রবির পদাথির্বজ্ঞান বিভাগে নন-লিনিয়ার বায়ো-অপটিকস রিসাচর্ ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা হয়। এই ল্যাবরেটরিতে ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষের রক্তের সিরামে শক্তিশালী লেজার রশ্মি পাঠিয়ে নন-লিনিয়ার সূচক পরিমাপ করার কাজ শুরু হয়। বায়োকেমিক্যাল প্রক্রিয়ায় যে বাড়তি রি-এজেন্ট ব্যবহার করতে হয়, উদ্ভাবিত নতুন পদ্ধতিতে তা প্রয়োজন হয় না। ফলে উদ্ভাবিত নতুন পদ্ধতির বিষয়টিকে আমলে নিয়ে আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, উদ্ভাবনী প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় যেমন আছে চিকিৎসক সংকট, চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণের অভাবও বিদ্যমান। এমন অবস্থায় দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে নতুন উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি জরুরি। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন যে, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টির লক্ষ্যে গবেষণায় ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরাও চাই গবেষণার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্বকে সামনে রেখে কাযর্কর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক। এ ছাড়া ড. ইয়াসমিন হক বলেছেন, উচ্চতর গবেষণার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। গবেষণায় তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। আমরা মনে করি, সাবির্কভাবে গবেষণার বিষয়টি প্রাধান্য দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। আর যেহেতু জানা যাচ্ছে, আগামী এক বছরের মধ্যে ক্যান্সার শনাক্তকরণের এই প্রযুক্তির ডিভাইস তৈরি করা সম্ভব হবেÑ ফলে বিষয়টিকে সামনে রেখে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।