পাঠক মত

শ্রমিকের অধিকারের প্রশ্ন সবাের্গ্র

প্রকাশ | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

উলুল আমর অন্তর শিক্ষাথীর্, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
যদি একজন শ্রমিক দিনে ১০ ঘণ্টা কাজ করে তার মধ্যে ৫ ঘণ্টা সে কাজ করে তার মজুরির সমপরিমাণ মূল্য উৎপাদন করে, অন্য ৫ ঘণ্টা ধরে সে উৎপন্ন করে উদ্বৃত্ত মূল্য, যা থেকেই তৈরি হয় সকল রকমের মুনাফা যার পুরোটাই চলে যায় মালিকের পকেটে। এই ৫ ঘণ্টা শ্রমিক বেগার খাটে। বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশ আসে গামের্ন্টস শিল্প থেকে। এই আয়ের ওপর দঁাড়িয়ে আছে গামের্ন্টস মালিকদের বাড়ি-গাড়ি। অথচ এদেশের শ্রমিকদের বেতন মাত্র ৫৩০০ টাকা। আন্তজাির্তক শ্রম অধিকার সংগঠনের দেয়া তথ্যমতে, বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা শ্রমিক হলো বাংলাদেশের শ্রমিক। অথচ এই শ্রমিকরাই উন্নত পোশাক তৈরি করে গামের্ন্টস শিল্পকে দেশের রপ্তানি আয়ের এক নম্বর খাতে পরিণত করেছে। দেশের গামের্ন্টস শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ১৬ হাজার টাকা করার জন্য বিভিন্ন শ্রমিক অধিকার সংগঠন মাঠে রয়েছে। মে দিবসের একাধিক সভা, সমাবেশে শ্রমিক নেতারা দ্রæত ১৬ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশও (টিআইবি) গামের্ন্টস খাত নিয়ে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ খাতের শ্রমিকদের মজুরি কমপক্ষে ২০২ মাকির্ন ডলার হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের কাছাকাছি মাথাপিছু আয় হওয়া সত্তে¡ও এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় গামের্ন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৯৭ ডলার। আর বাংলাদেশে ৬৮ ডলার। বতর্মানে যে সবির্নম্ন মজুরি রয়েছে, তাও অপেক্ষাকৃত ছোট ও সাব কন্ট্রাক্ট কারখানা বাস্তবায়ন করে না। বতর্মানে ভারতে গামের্ন্টস শ্রমিকদের সবির্নম্ন মজুরি ১৬০ ডলার, পাকিস্তানে ৯৪ ডলার, ভিয়েতনামে ১৩৬ ডলার, ফিলিপাইনে ১৭০ ডলার। উদ্বৃত্ত মূল্যের হক তো দূরের কথা, শ্রমিকরা এদেশে তার মজুরির সমপরিমাণ অথর্ও পায় না। মাত্র ৫৩০০ টাকায় ২০১৮ সালে একটা পরিবার তো দূরের কথা একজন মানুষের জীবন চালানোই কষ্টসাধ্য। এ ছাড়া ঠিকমতো ঈদ বোনাসও পান না শ্রমিকরা। গামের্ন্টস শ্রমিকরা মূল বেতন দশ হাজার টাকা এবং মোট বেতন ষোল হাজার টাকার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। এ দাবি যৌক্তিক, এ দাবিকে সমথর্ন করা দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের কতর্ব্য। শ্রমিক বঁাচলে বঁাচবে শিল্প, শিল্প বঁাচলে সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশ। তাই সবাইকে শ্রমজীবী জনতার সঙ্গে একাত্ম হতে হবে।