বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জনপ্রতিনিধিদের অনিয়ম ও দুর্নীতি

সরকারকে কঠোর হতে হবে
নতুনধারা
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যতই দিন যাচ্ছে দেশের জনপ্রতিনিধিদের অনিয়ম ও দুর্নীতি বেড়েই চলেছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বাগেরহাটের ফকিরহাটের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পাঁচ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। গত ৩১ আগস্ট তিনজন এবং ৬ সেপ্টেম্বর দুইজনকে বরখাস্ত করার এই আদেশ এসেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে। এসব জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সাধারণ উপকারভোগীদের ভুয়া বয়স্কভাতার কার্ড দিয়ে সরকারের টাকা আত্মসাৎ করা, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও ঘরের তালিকা তৈরিতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করার অভিযোগ পায় প্রশাসন। অভিযোগ তদন্ত করতে নেমে তার সত্যতা মেলে।

এ ছাড়াও কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নগদ অর্থ সহায়তা ও ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে  করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত মোট ১০০ জন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্য, পৌর কাউন্সিলর এবং উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যানও রয়েছেন। জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করার মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হলো- ত্রাণের সুষ্ঠু বণ্টন হয়নি। ত্রাণের চাল-তেল আত্মসাৎ করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে হাজার হাজার বস্তা চাল এবং শত শত বোতল ভোজ্যতেল উদ্ধার করা হয়েছে।

আমরা আগেও বলেছি, ত্রাণের সুষ্ঠু বণ্টন হওয়া জরুরি। এটা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। মনে রাখতে হবে, দুর্যোগকালে কর্মহীন গরিব মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের অবশ্য কর্তব্য। করোনাভাইরাসের মতো দুর্যোগে সারাদেশের সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে ত্রাণ সহায়তা সরকার অব্যাহত রেখেছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ। এ পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় দেড় কোটি পরিবারের সাড়ে ৬ কোটি মানুষকে ত্রাণের চাল দেয়া হয়েছে।

এটা সত্য, টানা ৬৬ দিন দেশ লকডাউনে থাকার কারণে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। দৈনিক রোজগার করতে না পেরে থমকে গিয়েছিল তাদের জীবনযাত্রা। এমন পরিস্থিতিতে সরকার তাদের পাশে দাঁড়ায়। তবে দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের তালিকা প্রণয়নে দলীয়করণের অভিযোগ তোলা হয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে। এসব মানুষের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করতে সরকার সারাদেশে যেসব চাল বরাদ্দ করেছে, এসব চাল বিতরণের জন্য তৈরি করা তালিকা নিয়ে দলীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ গরিবের ত্রাণ মেরে খাওয়া বড় অপরাধ।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাণঘাতী থাবায় আতঙ্কিত মানুষ। দেশে প্রতিদিন বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আর এ সংকটের সময়ে ত্রাণের সুষ্ঠু এবং সমন্বিত বণ্টন প্রয়োজন। সরকার কর্তৃক হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ যারা আত্মসাৎ করছেন তাদের কেবল বরখাস্ত নয়, কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কারণ গরিবের ত্রাণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার তাদের নেই। এর ফলে একদিকে যেমন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের হতদরিদ্ররা বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<111488 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1