মানবসম্পদ সূচকে পিছিয়ে দেশ

যথাযথ পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মানবসম্পদ সূচকে (এইচসিআই) দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে জানা যাচ্ছে, এই সূচকে বাংলাদেশের অর্জন ৪৬ শতাংশ। অর্থাৎ আজকে যে বাচ্চাটি জন্মগ্রহণ করেছে, তার কর্মক্ষমতাকে পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগানোর সম্ভাবনা ৪৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি আমলে নেওয়া দরকার যে, দক্ষিণ এশিয়ায় এই সম্ভাবনা ৪৮ শতাংশ। আর বৈশ্বিকভাবে একটি শিশুর কাজে লাগার সম্ভাবনা ৫৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের মানবসম্পদ সূচক ২০২০-এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, করণীয় নির্ধারণ করে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করা। এটা আমলে নেওয়া সমীচীন যে, সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশ এগিয়ে। ছেলেদের অর্জন ৪৫ শতাংশ। আর মেয়েদের ৪৮ শতাংশ। আর এটাই গড়ে ৪৬ শতাংশ। আমরা বলতে চাই, কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখতে হবে। প্রসঙ্গত, মানবসম্পদ সূচক মূলত করে থাকে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো এইচসিআই শুরু করে বিশ্বব্যাংক। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিবেদন প্রকাশ করল বহুজাতিক সংস্থাটি। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, এই প্রতিবেদনে এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের কোনো তুলনা করা হয় না। কোনো অবস্থান নির্ধারণ করা হয় না। শুধু একটি দেশের অবস্থান কোথায় সেটা দেখা হয়। এ ছাড়া প্রতিটি দেশের নিজেদের অবস্থান দেখানোর জন্য প্রতিবেদনটি তৈরি করে বিশ্বব্যাংক। আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়টি আমলে নেওয়া দরকার, একটি শিশু জন্মগ্রহণের পর থেকে তার নিজ দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার সুযোগ কতটুকু পাচ্ছে এবং সেটিকে কতটুকু কাজে লাগাতে পারছে, তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। ফলে আমরা মনে করি, সুযোগ কতটুকু পাচ্ছে এবং কতটুকু কাজে লাগাচ্ছে এটা যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনিভাবে কাজে লাগাতে না পারলে তার কারণ কী- বা সামগ্রিকভাবে সংকটগুলো কী, তা চিহ্নিত করা এবং একই সঙ্গে সংকট নিরসনে কাজ করতে হবে। এটাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একটি শিশু জন্মের পর থেকে ১০০ জন শিশুর মধ্যে ৯৭ জনই পাঁচ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আছে। এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ ভালো। এ ছাড়া শিশুর স্কুলে ভর্তি হওয়া ও বের হওয়ার সূচকেও বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। তবে স্কুলে শেখার মান সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অত্যন্ত দুর্বল। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, দুর্বলতার কারণগুলো চিহ্নিত করে সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। আমলে নিতে হবে যে, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলে শেখার মান সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৩৬৮। যেখানে ৬২৫ স্কোর হলো ভালো মানের। আর ৩০০ হলো সর্বনিম্ন স্কোর। খর্বাকৃতির সূচকেও বাংলাদেশের অবস্থান ভালো নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০০ জনের মধ্যে ৩০ জন শিশু খর্বাকৃতির। এ সংখ্যাও উদ্বেগের। সঙ্গত কারণেই এ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি আমলে নেওয়ার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যখন বিশ্বব্যাংক বলছে, চলমান করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর অবস্থান আরও পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। এবং মানবসম্পদ সূচকে (এইচসিআই) দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ- এ বিষয়টিকে কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।