পাঠক মত

শিশুদের স্মার্টফোন দেয়ার আগে সতর্ক হোন

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনা মানুষকে পরিবারের কাছাকাছি এনে দিলেও স্মার্টফোন, কম্পিউটারকে কিন্তু দূরে ঠেলে দেয়নি। অফিস কিংবা স্কুলের ক্লাস সবই এখন ঘরে বসেই হচ্ছে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস করার মূল হাতিয়ার স্মার্টফোন, ট্যাব কিংবা কম্পিউটার। তবে, বেশির ভাগ শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনই ব্যবহার করে থাকে। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সংসদ টিভিতে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হলেও এই বন্দি সময়ে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ট্যাব, স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারকেই বেছে নিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতে করে অল্প বয়সে এগুলোর প্রতি আসক্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিকর রশ্মি ক্ষতি করছে চোখকে। চক্ষু বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে দৃষ্টি বৈকল্য হতে পারে। বিজ্ঞান বলে, মোবাইল ফোন রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ওয়েভের ভিত্তিতে কাজ করে- যা স্বল্পক্ষমতার বিকিরণ ব্যবহার করে। এক্স-রে, আলট্রা ভায়োলেট বা গামা বিকিরণে যা ব্যবহৃত হয়, এটি তার চেয়ে অনেক কম ক্ষমতার। তবুও এটি মানব শরীরে কতটা প্রভাব ফেলে, তা এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। কিন্তু আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, মোবাইল ফোন হয়তো ব্রেন টিউমার বা মাথা বা গলার টিউমারের ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, অনেকে আগাম সতর্কতা হিসেবে এগুলো বেশি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু করোনার জন্য সেই নির্দেশনা মেনে চলা অনেকটাই দুষ্কর। পড়ালেখার সুবিধার জন্য মোবাইল, টিভি, কম্পিউটারের ব্যবহার করে থাকলেও পড়ালেখার বাইরে আরো অনেক সময় শিশুরা এসব ইলেকট্রনিক যন্ত্রের সঙ্গেই কাটায়। এতে করে অল্প বয়সে চোখের আলো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারের সুযোগ ও পরিবারের খামখেয়ালির কারণে শিশুরা এতে আসক্ত হয়ে পড়ে। এতে করে পরবর্তী সময়ে তারা দীর্ঘক্ষণ কোনো বিষয়ের প্রতি মনযোগ দিতে পারে না। শারীরিক ক্ষতি তো আছেই! পরিবারের খামখেয়ালির কারণে কোমলমতি শিশু-কিশোররা কম্পিউটারে পড়াশোনা করার পর কোনো ধরনের বিনোদন নিচ্ছে, কতটা সময় কম্পিউটার, ফোনের সঙ্গে কাটাচ্ছে তা অভিভাবকদের পর্যবেক্ষণ করা দরকার। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার যেমন ভালো তেমনি খারাপ। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে শিশু-কিশোররা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে, মনের কথাগুলো কাউকে খুলে বলতে পারে না। প্রায়ই বিষণ্নতায় ভুগে। এতে করে তার আত্মহত্যা করার সম্ভাবনা থাকে। ইতোমধ্যে, বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। আজকের একাকী, বিষণ্ন ছেলেটা যে পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করবে না, তার নিশ্চয়তা তো আর দেয়া যাচ্ছে না! তাই, এখনি সময় শিশুকে সময় দেয়ার, পথ দেখবার। না হলে, এই খামখেয়ালির কারণে এই নিষ্পাপ শিশুগুলো হতে পারে পর্নোগ্রাফির ভয়াল থাবার শিকার কিংবা অল্পবয়সে হারাতে পারে চোখ। এছাড়া বর্তমানের ভাইরাল রোগ তো রয়েছেই! এসব জিনিস হয়তো শিশু মনেও নাড়া দিয়ে যাবে। কেউ হয়তো ভাইরাল হতে যাবে আইনের বিরুদ্ধে যায় এরকম কিছু করে। তাই, করোনা সময় ও পরবর্তী সময়ে শিশু-কিশোরদের কোনো প্রকার প্রযুক্তি কিংবা ডিভাইস ব্যবহার করতে দেয়ার আগে সতর্ক হোন এবং দেয়ার পর পর্যবেক্ষণ করুন। ইকবাল হাসান শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগ কুমিলস্না বিশ্ববিদ্যালয়