দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন

গ্যাস লাইনে লিকেজ

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কোনোভাবেই যেন রোধ হচ্ছে না বিস্ফোরণ, অগ্নিকান্ডের মতো ভয়ানক ঘটনা। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে, শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তলস্না এলাকার বায়তুস সালাত মসজিদের বিস্ফোরণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গ্যাসের পাইপলাইনের লিকেজের বিষয়টি উঠে এসেছে। বলা দরকার, এ ঘটনায় মৃতু্যর সংখ্যা ৩৪। স্বাভাবিকভাবেই তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনের লিকেজ থেকে এত মানুষের প্রাণহানির ঘটনার ভয়াবহতা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনের লিকেজ থেকে এত মানুষের প্রাণহানির পর তিতাসের বিতরণ এলাকার মানুষ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন লিকেজ নিয়ে। তিতাসের হাতে যে তথ্য রয়েছে, তাতেই বলা হচ্ছে ১ হাজার ৬২২টি লিকেজ রয়েছে তাদের বিতরণ এলাকায়। এর মধ্যে সংস্কার করে ঠিক করা হয়েছে ৭৮১টি। বাকি ৮১৪টি এখনো অরক্ষিত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এমন প্রশ্ন উঠেছে, এই ৮১৪টি লিকেজ থেকে তাহলে কত দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে! আমরা মনে করি, গ্যাসের লিকেজ থেকে দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে যে সব অগ্নিকান্ড বা বিস্ফোরণের মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে তা আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেননা এভাবে মানুষ চলে যাবে না ফেরার দেশে, এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। উলেস্নখ্য, ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ পর্যন্ত গ্যাস বিতরণ করে তিতাস। বেশির ভাগ পাইপলাইনেরই মেয়াদ ফুরিয়েছে অনেক আগে। এসব পাইপলাইন একবার বসানোর পর নিয়মিত দেখভালেরও অভাব রয়েছে। গ্রাহক লিকেজ খুঁজে পেলে তিতাসকে ফোনে জানালে তিতাস ব্যবস্থা নেয় এমনটিও জানা যায়। ফলে আমরা মনে করি, এ বিষয়গুলো আমলে নিয়ে উদ্যোগী হতে হবে। দেখভাল থেকে শুরু করে মেয়াদোত্তীর্ণ পাইপলাইনের বিষয়টিকে সামনে রেখেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বলা দরকার, নারায়ণগঞ্জ মসজিদে দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জানিয়েছেন, তিতাস চার লাখ রাইজার অনুসন্ধান করে ৭ শতাংশে লিকেজ পেয়েছে। অর্থাৎ তিতাসের কাছে আগে থেকেই লিকেজের খবর রয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা সংস্কার করা হয় না। তবে এই দুর্ঘটনা ঘটার পর তিতাস কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসেছে। আমরা মনে করি, লিকেজসংক্রান্ত যে বিষয়গুলো আলোচনায় আসছে তা আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। আমরা উলেস্নখ করতে চাই, এমন বিষয়ও উঠে আসছে, তিতাসের পক্ষ থেকে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, তাতে প্রত্যেক বিভাগের জন্য আলাদা টেলিফোন নম্বর দিয়ে লিকেজের তথ্য জানাতে গ্রাহককে অনুরোধ করা হয়েছে। তিতাসের হাতে থাকা লিকেজগুলো দুই মাসের মধ্যে সংস্কারের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ সব লিকেজ থেকে এর মধ্যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কে নেবে এমন প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে এ বিষয়গুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, তিতাসের বিতরণ এলাকায় ১ হাজার ৬২২টি লিকেজ রয়েছে এর মধ্যে সংস্কার করে ঠিক করা হয়েছে ৭৮১টি। বাকি ৮১৪টি এখনো অরক্ষিত- এ বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। নারায়ণগঞ্জের এত বড় দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রম্নত সম্ভব সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সঠিক বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। কেননা এমন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি কখনোই কাম্য হতে পারে না। আর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাবে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, নারায়ণগঞ্জে বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে গ্যাসের কারণে অগ্নিকান্ড ঘটেই চলেছে- এমনটিও আলোচনায় আসছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হবে এমনটি কাম্য।