রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উন্নয়ন ভাবনা

রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উন্নয়ন ভাবনা আজ বাংলাদেশকে পৌঁছে দিয়েছে এমন এক মাত্রায় যেখানে উন্নয়ন ও শেখ হাসিনা এক অভিন্ন প্রত্যয়। উন্নয়নের প্রমিথিউস সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের উন্নয়নের প্রমিথিউস রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ খুঁজে পেয়েছিল তার আসল ঠিকানা। অনাদরে অবহেলায় নিমজ্জিত বঙ্গ জননী ছিল দরিদ্রক্লিস্ট ও হাভাতে। ২১ বছর পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে ১২ কোটি মানুষকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছিল স্বপ্ন দেখাতে শিখিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন 'গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করব।' জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের রূপরেখা প্রণয়ন করেন। পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী (১৯৯৬-২০০২) পরিকল্পনা ঘোষণা করে দেশকে আত্মনির্ভরশীল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বিদু্যৎ উৎপাদন, টেলিযোগাযোগ, পরিবহণ ও বেকারত্ব হ্রাসকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নয়নের জন্য কাজ করতে থাকেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তর বঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে যমুনা নদীর ওপর 'বঙ্গবন্ধু সেতু' নির্মাণ করেন। ১২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে কুখ্যাত 'ইনডেমনিটি বিল' বাতিল করার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর ববঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দরজা খুলে দেন। ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর দীর্ঘদিনের অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে 'শান্তি চুক্তি' সম্পাদিত হয়। পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি ফিরে আসে। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন 'ইউনেস্কো' ২১ ফেব্রম্নয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে ঘোষণা দেয়। ২০০০ সাল থেকে সারা পৃথিবীর মানুষ বাঙালির মাতৃভাষা দিবসকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে থাকে। অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়। বিগত একুশ বছরের অনুন্নয়নের ধারা বদলে দিয়ে বাংলাদেশকে নতুনরূপে গড়ে তোলার আধুনিক পরিকল্পনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনগণের কর্মসংস্থান, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কৃষিতে ভর্তুকি দিয়ে খাদ্য উৎপাদনে আশাতীত সাফল্য, মাতৃ মৃতু্যহার হ্রাসকরণ, শিশু মৃতু্যহার হ্রাসকরণ, নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প, ঘরে ফেরা প্রকল্প, কমিউনিটি ক্লিনিক- 'সূর্যের হাসি', 'সবুজ ছাতা' প্রকল্প ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নের সূচনা করেন। ১৯৯৮ সালে ভয়াবহ বন্যার পরেও বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার ধরে রাখা সম্ভব হয়েছিল ৫.০০%। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়। অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে 'শান্তি চুক্তি' সম্পাদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের মানুষের কাছে শান্তির দূত হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। শান্তি স্থাপনের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (টহবংপড় ঐড়ঁঢ়যড়ঁবঃ ইড়রমহু চবধপব চৎরুব) শান্তি পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও দেশে খাদ্য ও কৃষিতে সাফল্যজনক উন্নয়নের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংগঠন ঋঅঙ কর্তৃক ঈঊজঊঝ (১৯৯৯) পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। ঘোর অমানিশা গ্রাস করেছিল মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির উত্থানে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী জামায়াতের গাড়িতে ৩০ লাখ শহিদের পবিত্র রক্তে অঙ্কিত জাতীয় পতাকা উড়তে দেখেছিল এই বাংলাদেশ। ২০০৪ সালে আর একটি শোকাবহ আগস্ট সৃষ্টি করতে চেয়েছিল একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা। সিলেটের অহঙ্কার কিবরিয়া, গাজীপুরের গর্ব আহসান উলস্নাহ মাস্টার, নাটোরের বঙ্গবন্ধুর সৈনিক মমতাজ উদ্দিনকে জীবন দিতে হয়েছিল সেই অন্ধকার সময়েই। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আবার পেল উন্নয়নের প্রমিথিউস রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। শোককে শক্তিতে, ভয়কে সাহসে জয় করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিজেকে উৎসর্গ করার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামেলেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন 'রূপকল্প-২০২১' বাস্তবায়ন হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। দরিদ্র্যতা, ক্ষুধা দূর হবে চিরতরে। গ্রাম হবে শহর। সমাজের প্রত্যেকটি মানুষ হবে উন্নয়নের প্রতিনিধি। '২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি মধ্যম আয়ের দেশ।' রূপকল্প বাস্তবায়নে দুটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০১১-২০১৫ এবং ২০১৬-২০২০কে গুরুত্ব দেয়া হয়। ষষ্ট পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১১-২০১৫) অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নকে যুগপৎভাবে এগিয়ে নিতে শুরু হয় 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার কাজ। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও ষষ্ট পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় গড়ে ৬.৩%। ১৯৯১ সালে যেখানে দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৭% সেখানে ২০১৫ সালে দারিদ্র্য বিমোচন করে ২৫% কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্রমাগত সাফল্য ধরে রাখার কারণে ২০১৫ সালে বিশ্ব ব্যাংকের জরিপে বাংলাদেশ একটি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদায় উন্নীত হতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বিগত সরকারগুলোর সময় কল্পনাও করা যেত না। মাথাপিছু আয় বেড়ে ১,৩১৪ (এক হাজার তিন শত চৌদ্দ) মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। কৃষিতে ব্যাপক সাফল্যের কারণে ৩৫ মিলিয়ন টন খাদ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করতে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ 'আন্তর্জাতিক যোদ্ধাপরাধ ট্রাইবু্যনাল' গঠন করেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যারা গণহত্যা, মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা ও মানবতাবাদী অপরাধে জড়িত ছিল তাদের বিচার প্রক্রিয়ার দরজা খুলে যায় এই আইন পাসের মধ্য দিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় কর্তৃক 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' ধারণার সুফল আজ বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের নাগালের মধ্যে পৌঁছে দিতে কাজ শুরু হয়েছে। উন্নয়ন ও জীবনমানের পরিবর্তনের সুফল পাচ্ছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। মোবাইল ব্যাংকিং, অবাধ তথ্যপ্রবাহ, টেলি মেডিসিন, ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্যকেন্দ্র স্থাপন, শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার হ্রাস, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, শিক্ষার্থীদের ভাতা, বছরের প্রথমদিন বই উৎসবসহ সব শ্রেণির মানুষের দোড়গোড়ায় আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। বৈশ্বিক উন্নয়নের সহযাত্রী হিসেবে জাতিসংঘ মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনে নির্ধারিত গউএ (গরষষবহরঁস উবাবষড়ঢ়সবহঃ এড়ধষ) লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে 'শিশু মৃতু্যহার হ্রাস' করার ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১০ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক 'মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল' পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়া ২০১১ সালে 'গেস্নাবাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড' (২০১১), তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে অভূত উন্নয়ন- বিশেষ করে শিশু ও মাতৃ মৃতু্যহার কমানোর সাফল্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ ও ২০১৩ দুইবার 'সাউথ-সাউথ পুরস্কার' লাভ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উন্নয়নের অভিযাত্রাকে ব্যাহত করতে বিএনপি জামায়াত 'চার দলীয় জোট' নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সরকারের সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করতে ২০১১ সালে প্রণীত 'নারী উন্নয়ন নীতি' ও ২০১০ সালে প্রণীত 'শিক্ষা নীতি'র বিরুদ্ধে 'হেফাজতে ইসলাম' ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করে। হেফাজতের এ আন্দোলনে বিএনপি একাত্মতা ঘোষণা করে সরকার পতনের কর্মসূচি দেয়। কিন্তু জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের কাছে হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপির যুগপৎ কর্মসূচি বাতিল করতে বাধ্য হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করতে বিএনপি অবরোধ, লাগাতার হরতাল ও আগুন সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, ট্রেনে, বাসে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। রাস্তা ঘাটে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার মধ্য দিয়ে দেশে এক মধ্যযুগীও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর 'পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে'র কাজ শুরু হয়। ৬.২৪১ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণের যাবতীয় খরচ বাংলাদেশ সরকার বহন করছে।১৫৩ দক্ষিণ বঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার এক আমূল পরিবর্তন ঘটাবে এই সেতু। রাজধানী ঢাকার নাগরিক জীবনকে র্নির্বিঘ্ন ও গতিশীল করতে ২০১৬ সালে 'মেট্রোরেল' প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবকাঠামোগত উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে কাজ করে চলেছেন। দেশে বিদু্যতের ক্রমাগত চাহিদা পূরণ করতে ২০১৭ সালে চব্বিশ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন সম্পন্ন 'রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ কেন্দ্র' প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। বিশ্বের উন্নয়ন সহযাত্রী হিসেবে জাতিসংঘ কর্তৃক ঝউএং (ঝঁংঃধরহধনষব উবাবষড়ঢ়সবহঃ এড়ধষং) ২০৩০ সালের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করছে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নয়নের অভিযাত্রায় সম্পৃক্ত হয়েছে মহেশখালীতে ভাসমান 'এলএনজি' টার্মিনাল, মাতারবাড়ি ১২০০ (এক হাজার দুইশত) মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লা বিদু্যৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সংযোগ, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, সেনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর (পরিকল্পনায় রয়েছে), ১,৩২০ (এক হাজার তিনশত বিশ) মেগাওয়াট কয়লা বিদু্যৎকেন্দ্র, রামপাল (সুন্দরবন), কর্ণফুলি টানেল, শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, পূর্বাচল ঢাকা। এছাড়াও প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের অধীন ১১টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে, ৩১৬টি বেসরকারি কলেজকে সরকারিকরণ করা হয়েছে, ২৬,১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে। \হ২০১৮ সালের নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন্ন রাখেন। ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে এখন মহাকাশে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে দেশে বিদু্যৎ উপাদন ক্ষমতা ২০,০০০ (বিশ হাজার) মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ) এবং বিদু্যতের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ। যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। পৃথক রেল মন্ত্রণালয় (২০১১) স্থাপন করে রেল যোগাযোগ আধুনিক করা হয়েছে, ৫ হাজার ১৭১ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও ৫২ হাজার ২৮০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি হার ছিল ৭.৮৬%। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর এ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৯.৪০ মার্কিন ডলার এবং রেমিট্যান্স ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার মজুত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশের এই উন্নয়ন শেখ হাসিনার অবদান। ২০১৭ সালে প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে বিতাড়িত হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আশ্রয় দেন। নির্যাতিত অসহায় মানুষকে আশ্রয় দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্বে মানবতাবাদী নেত্রী হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং এর স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালে 'মাদার অব হিউমিনিটি' সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ২০১৯ সালে 'গেস্নাবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উন্নয়ন ভাবনা আজ বাংলাদেশকে পৌঁছে দিয়েছে এমন এক মাত্রায় যেখানে উন্নয়ন ও শেখ হাসিনা এক অভিন্ন প্রত্যয়। উন্নয়নের প্রমিথিউস সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান : উপাচার্য জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়