নিয়ন্ত্রণহীন বাজার

এবার বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অনেকদিন থেকেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। পেঁয়াজ, চাল ও আলুর পাশাপাশি এবার বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় এ সময়ে দেশেও সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি খোলা পাম অয়েল ৯০ টাকা আর সয়াবিন তেল ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা লিটার দরে। খুচরা বাজারে এখন প্রতি লিটার তেলের দাম ১১০ থেকে ১১২ টাকা। পাইকারিতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রয়েছে ৮৮ টাকা ৭৫ পয়সা। আর মিল মালিকরা নতুন দাম চাচ্ছেন ৯২ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যোগ হবে পরিবহণ ব্যয় ও লভ্যাংশ। সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর এই পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার স্থিতিশীল হলেই কেবল দেশের বাজার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলোতে সয়াবিনের মজুত কমে যাওয়ার কারণেই মৌসুমের শেষ দিকে এসে পণ্যটির দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে বাজারসংশ্লিষ্টদের ধারণা। আর ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া কেন্দ্রিক পাম অয়েলের দাম বাড়ছে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার কারণে। ক্রেতারা মনে করছেন, এটা তাদের অজুহাত। আমরাও তাই মনে করছি। পেঁয়াজ, চাল ও আলুর ভোজ্যতেলের পর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুন, বরবটি, করলা ও উচ্ছের দাম। সবজির উচ্চমূল্য নিয়ে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারগুলোতে সংকট থাকায় বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে সবজির। আর ক্রেতারা বলছেন, যে কোনো ইসু্য পেলেই বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দিয়ে ক্রেতাদের জিম্মি করছে। আর চালের দাম তো আগে থেকেই বাড়ানো হয়েছে। অথচ বাজারে পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের কারসাজি। আমরা মনে করি, দেশের অসৎ ও অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা রমজান মানে না করোনাভাইরাসকালেও জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। তাদের অতি লোভী মানসিকতার কারণেই দেশের সাধারণ জনগণ তাদের কাছে জিম্মি। অবাক ব্যাপার যে, বাজারে নিত্যপণ্যের কোনো ধরনের সরবরাহ সংকট নেই, তারপরেও হুহু করে দাম বাড়ছে প্রায় সব ধরনের পণ্যের। ফলে দেশের জনসাধারণের নাগালের বাইরে চলে গেছে প্রতিটি পণ্যের দাম। যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে বাজার নিয়ন্ত্রণের আশ্বাসও দেয়া হয়েছে। কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই হতাশাজনক চিত্র। সরকারের উচিত এই দুর্যোগকালে নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণ করা। করোনা দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সামনে সময় আরো কঠিন হতে পারে এই কথা মাথায় রেখে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।