পাঠক মত

করোনায় বাড়ছে স্মার্টফোন আসক্তি

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনা মহামারিতে দীর্ঘ সময় ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা যাতে সচল থাকে সে জন্য অনলাইন ক্লাসের নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভার্চুয়াল এ অনলাইন ক্লাসে যুক্ত না হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান পাঠদান করছে অনলাইন মাধ্যমে। যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েই ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে মত বিনিময় করছে প্রশ্নোত্তরের। মোবাইলের স্ক্রিনে বিরতিহীন চোখ রেখেই পাঠ নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘ ৫-৬ ঘণ্টার রুটিনে ক্লাস চালিয়ে যেতে স্মার্টফোনকে যেন অতি আপনজন করে নিতে হচ্ছে সবার। তবে এত দীর্ঘ সময় অনলাইনে যুক্ত থেকে লেখাপড়া চালিয়ে গেলেও তার অনেক নেতিবাচক প্রভাবও পড়ছে ছেলেমেয়েদের ওপর। পরিবারের কোনোরকম বাধানিষেধ ছাড়াই দিনের পর দিন অনায়াসে ব্যবহার করতে পারছে স্মার্টফোন আর সে জন্য তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে মোবাইলের প্রতি তীব্র আসক্তি। এ আসক্তির ফলে নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত কিশোর-কিশোরীদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয়। কিং জর্জস মেডিকেল ইউনিভার্সিটির একজন সিনিয়র মনোবিদ বলেছেন, 'মোবাইলে অনলাইন ক্লাস করার সুযোগে অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে অল্প বয়স্ক অনেক শিক্ষার্থী। তারা এ ডিভাইস ব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়ছে। যার ফলে অল্পতেই মেজাজ হারানো কিংবা খিদে না পাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।' কেউ কেউ আবার ঝুঁকছে ভিডিও গেমের প্রতি। এ গেম আসক্তি সাধারণত ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে: প্রথমে কৌতূহল, হয়তো কোনো নতুন ভিডিও গেম একবার খেলে দেখা- দ্বিতীয়পর্যায়ে হলো 'এনজয়মেন্ট' বা আনন্দ পাওয়া; তৃতীয়পর্যায়ে 'হ্যাবিচুয়েশন' বা অভ্যেস হয়ে যাওয়া,?চতুর্থপর্যায়ে অপব্যবহার, অর্থাৎ মাত্রাতিরিক্ত মিডিয়া ভোগ করা, আর শেষপর্যায়ে হলো নেশা। তখন গেমাররা তাদের বন্ধু-বান্ধব বা অন্যান্য কাজ-কর্ম অবহেলা করতে শুরু করে, এমনকি স্কুল-কলেজেও যেতে অনীহা প্রকাশ করতে থাকে। ভারতের চার্টার বিশ্ববিদ্যালয় তাদের একটি গবেষণায় দেখিয়েছে, স্মার্টফোনের অধিক ব্যবহারে চোখের রেটিনা, কর্নিয়া এবং অন্যান্য অংশের ক্ষতি হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন, করোনাকালে এ সময়ে অনেকটা সময় স্মার্টফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে ক্লাসে অংশগ্রহণ করায় চোখ লাল হওয়া ও চোখ থেকে পানি পড়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার ফলে দৃষ্টিশক্তিও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া মাথাব্যথা, চোখ জ্বালা করার মতো সমস্যা তো রয়েছেই। তবুও বর্তমান এ করোনা সিচুয়েশনে সব ধরনের সমস্যা উপেক্ষা করে শিক্ষার চাকা সচল রাখতে অনলাইন ক্লাসের বিকল্প নেই। তবে অনলাইনে অধিক সময় ব্যয় করে পাঠে অংশগ্রহণ যাতে কোনোভাবেই স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে না পারে সে বিষয়ে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। সচেতন হতে অভিভাবকদের, ক্লাস বহির্ভূত সময়টা যেন ছেলেমেয়েরা স্মার্টফোনে আসক্ত না থাকে সে বিষয়েও সুদৃষ্টি দিতে হবে। দেলোয়ার হোসেন রনি সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা