লিঙ্গসমতায় বাংলাদেশের অগ্রগতি

এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অজের্নর জন্য লিঙ্গবৈষম্য দূর করার বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপযর্পূণর্। কেননা লিঙ্গবৈষম্য দূর না হওয়ার অথর্ হলো, তা একটি দেশের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে সামনে আসা, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আর যখন এমনটি জানা যাচ্ছে যে, লিঙ্গসমতার বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের বেশ অগ্রগতি হয়েছে, তখন তা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার অগ্রগতির বিষয়টিকে আমলে নেয়া এবং এই ধারাকে আরও গতিশীল করতে কাযর্কর উদ্যোগ জারি রাখা। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, বাংলাদেশে লিঙ্গবৈষম্য কমছে, যার ফলে দেশও এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের গুরুত্বপূণর্ খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ‘ওয়াল্ডর্ ইকোনমিক ফোরাম’ এর (ডাবিøউইএফ) তালিকা অনুযায়ী, লিঙ্গসমতার ক্ষেত্রে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়। আর পুরো বিশ্বের মধ্যে অবস্থান ৪৭তম। এশিয়ার দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের পরে আছে যথাক্রমে মঙ্গোলিয়া, লাওস, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়া। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি লিঙ্গসমতার সূচকটি প্রকাশ করে সুইডেনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডাবিøউইএফ। দেখা যায়, এতে এশিয়ার শীষর্ ১০টি দেশের মধ্যে সবার ওপরে আছে ফিলিপাইন। এরপরই আছে বাংলাদেশ। অথার্ৎ এই তালিকায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় এবং বিশ্বে ৪৭তম, ফলে লিঙ্গসমতার ক্ষেত্রে যে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে এই বিষয়টি স্পষ্ট। তবু বলা দরকার, পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে কাযর্কর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে লিঙ্গবৈষম্য আরও কমানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। লক্ষণীয়, ডাবিøউইএফের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পকের্ বলা হয়েছে, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি গত বছরের চেয়ে কয়েক ধাপ ওপরে উঠে এসে বিশ্বের মধ্যে ৪৭তম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ অথৈর্নতিক সুযোগ-সুবিধাসহ সাবির্কভাবে লিঙ্গবৈষম্যের ৭২ শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।’ এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘পালাের্মন্টের সদস্য হওয়া, ঊধ্বর্তন কমর্কতার্ কিংবা ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করা এমনকি টেকনিক্যাল অনেক সেক্টরে লিঙ্গবৈষম্য কমে এসেছে। এ ছাড়া আয়ের বৈষম্য কমার ক্ষেত্রেও বেশ অগ্রগতি ঘটেছে।’ লিঙ্গবৈষম্য কমে আসার পাশাপাশি যখন আয়ের বৈষম্য কমার ক্ষেত্রেও বেশ অগ্রগতি ঘটেছে, এটাও অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই আমরা মনে করি। কেননা লিঙ্গবৈষম্যর কারণে আয়ের পাথর্ক্য পরিলক্ষিত হলে এটা দুঃখজনক, যা কাম্য নয়। প্রসঙ্গত বলতে চাই, ডাবিøউইএফ বিভিন্ন দেশের অথর্নীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে লিঙ্গসমতার সূচক করে থাকে। ফলে এই বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়া এবং এসব ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের সংকট থাকলে তা নিরসনে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা জরুরি। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, নানা ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য লিঙ্গসমতা কমে আসার বিষয়টি গুরুত্বপূণর্। আমরা মনে করি, অথৈর্নতিক সুযোগ-সুবিধাসহ সাবির্কভাবে যখন লিঙ্গবৈষম্যের ৭২ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, তখন এটি আমলে নিতে হবে এবং আরও কমিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের সবার্ত্মক প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, দেশকে সামগ্রিক সমৃদ্ধির ধারায় এগিয়ে নিতে হলে লিঙ্গবৈষম্য দূর করা জরুরি। সঙ্গত কারণেই দেশের অথর্নীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধাসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো পযের্বক্ষণ করতে হবে এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে যথাযথ পদক্ষেপও নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে লিঙ্গসমতায় বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।