শীতের সঙ্গে সঙ্গে পথশিশুদের জীবনে নামছে দুর্ভোগও

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
শীতকালের নাম শুনলেই চোখে ভাসে হরেকরকম পিঠাপুলি আর বনভোজনের কথা। কল্পনায় নাকে লাগে কাঁচা খেজুর রসের মন মাতানো ঘ্রাণ। আমাদের কাছে শীত মানে রঙ-বেরঙের শীত পোশাক, কার পোশাকটা কত স্টাইলিশ তা নিয়ে কথা কাটাকাটি। যারা ঢাকায় থাকি তাদের তো আজীবনের আক্ষেপ শীত কম পড়ে বলে। ইট-পাথরের দেয়ালের ভেতরে হুডি-চাদর-জ্যাকেট-টুপিতে শীতকে ধরাশায়ী করে বিজয়ীর হাসি হাসতে দেখা যায় আমাদের। কিন্তু যারা হাড় কাঁপানো উত্তরে বাতাস আর শীতে খালি গায়ে রাস্তার বরফ ঠান্ডা কংক্রিটের ফুটপাতে থাকে, তাদের কাছে শীতের মানেটা আলাদা। ওরা শীত পোশাকের স্টাইল নিয়ে মাতামাতি করে না, একটা যেনতেন পোশাক হলেই ওদের চলে। তীব্র শীতে যখন আমাদের কম্বলের নিচ থেকে উঠতেই ইচ্ছে করে না, তখন ওরা ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে পথে পথে ঘোরে খাবার জোগাড়ের আশায়। শীত নামলে যখন আমরা দল বেঁধে বনভোজনে যাই, ওরা তখন একটা কম্বলের জন্য দোরে দোরে ঘোরে। অনেক সময় দশ-বারো বছরের পথশিশুদের ঘাড়ে থাকে ছোটভাই বা বোনের দায়িত্ব। নিজের ছেঁড়াফাটা জামা দিয়েই ছোটভাই বা বোনকে জড়িয়ে রেখে কমাতে চায় শীতের তীব্রতা। দূর থেকে দেখে শীত যেন মুখ লুকিয়ে হাসে। আমাদের জীবনে শীত আনন্দ আর উচ্ছলতা নিয়ে এলেও ওদের জীবনে শীত এক অভিশাপ। কারণ শীতে আমাদের মতো ওদের কম্বলের নিচে অলস বসে থাকলেই হয় না। ওদের রাস্তায় বেরোতে হয়, হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে ওদের খাবার জোগাড়ের সংগ্রাম করতে হয়। আমরা নিজের ছোট্ট সন্তানটাকে মাঝরাতে তীব্র শীতের মধ্যে ফুটপাতে শুয়ে থাকতে দেখতে পারব? ওরাও তো কারও সন্তান। ওদের দেখে কি আমাদের একটুও মায়া লাগে না? আসুন পথশিশুদের শীত থেকে বাঁচাতে আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসি। হোক না তা কমদামি কম্বল দিয়ে, হোক না তা একটুখানি উষ্ণ স্নেহ দিয়ে। অন্তত মানুষের কাছে বড়াই করার জন্য হলেও ওদের একটুখানি সাহায্য করুন। আপনার উদ্দেশ্য যাই হোক, ওরা একটুখানি উষ্ণতা পাবে। আসুন উষ্ণতা ছড়িয়ে দিই যে যতটুকু পারি। হাবিবুন নাহার মিমি শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা