শ্রম আইন

সবাইকে সুরক্ষা দিতে হবে

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
দেশের বিদ্যমান শ্রম আইন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিদ্যমান শ্রম আইন সব ধরনের শ্রমিকের স্বাথর্ যেমন নিশ্চিত করে না তেমনি শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষাও দেয় না। দেশের একটি বড় অংশ বিদ্যমান শ্রম আইনের বাইরে রয়েছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশের বিদ্যমান শ্রম আইন শ্রমশক্তির মাত্র ১৫ শতাংশ শ্রমিককে আইনি সুরক্ষা দেয়। বাকিরা এর বাইরে থেকে যাচ্ছে। সোমবার ঢাকা রিপোটার্সর্ ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন জাতীয় গাহর্স্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়নের (এনডিডাবিøউডাবিøউইউ) নেতারা। বক্তারা বলেন, শ্রমশক্তির অন্যতম গৃহ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, হোম ওয়াকার্সর্, স্বাস্থ্যকমীর্, ছোট যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক পরিবহন শ্রমিক, পরিচ্ছন্নতাকমীর্, হকারসহ গ্রামীণ ও নগর দরিদ্রদের শ্রম আইন বহিভ‚র্ত রাখা হয়েছে। এ সব অপ্রাতিষ্ঠানিক ও অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য কোনো আইন নেই, নেই কোনো নীতিমালা। বতর্মান সরকার গৃহ শ্রমিকদের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করলেও তার বাস্তবায়ন নেই। এমনকি নীতিমালায় নিবন্ধনের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও তা উপেক্ষিত। গৃহ শ্রমিকরা নানাভাবে অত্যাচার-নিযার্তনের স্বীকার হলেও তারা আইনি কোনো সুরক্ষা পাচ্ছে না। এটা সত্য গৃহ শ্রমিকরা নানাভাবে অত্যাচার-নিযার্তনের স্বীকার হচ্ছে দীঘির্দন থেকে। এমনকি তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এমনকি তৈরি পোশাক খাত থেকে শুরু করে পরিবহন খাত নিমার্ণ খাতসহ বিভিন্ন শ্রমজীবী পেশায় যারা নিয়োজিত রয়েছে, দিনের পর দিন তাদের নিহত হওয়ার ঘটনা বাড়ছেই। এ ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কোনো মনোযোগ আছে বলে মনে হয় না। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় যে আমরা শ্রমিকদের ব্যাপারে উদাসীন, কারণ তারা সমাজের খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষ। শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা নিঃসন্দেহে একটি দুঃখ ও হতাশাজনক ঘটনা। উল্লেখ্য, অনিরাপদ কমের্ক্ষত্রের কারণে বিভিন্ন সেক্টরে চলতি বছর ১ হাজার ২৪০ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৫৪৪ জন শ্রমিক। এখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালে কমের্ক্ষত্রে নিহত শ্রমিকদের মধ্যে ৩৫৯ জন প্রাতিষ্ঠানিক খাতে এবং ৮৮১ জন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করতেন। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে পরিবহন খাতে। মোট ৪৮৬ জন শ্রমিক এ খাতে নিহত হয়েছেন। ৪১ শতাংশ স্থায়ী গৃহ শ্রমিক যারা বাসায় থেকে কাজ করে কোনো না কোনো সময় তাদের কমর্স্থলে নিযার্তনের শিকার হয়েছে। এই চিত্র নিঃসন্দেহে হতাশাজনক। প্রবাসী ও দেশের অভ্যন্তরে কমর্রত শ্রমিকদের সুরক্ষায় ১০ দফা দাবিও উঠে এসেছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৫ সালের গৃহ শ্রমিক নীতিমালা শতভাগ বাস্তবায়ন, নীতি-নিদের্শনা অনুযায়ী জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন এলাকায় সেল গঠন ও পরিদশর্ন টিম গঠন, শিশুশ্রম বন্ধ, গৃহ শ্রমিকদের নিবন্ধন, নিযার্তনের মামলাগুলো দ্রæত বিচার, গৃহ শ্রমিকদের মযার্দা দেয়া, প্রবাসী গৃহ শ্রমিক নিযাির্তত হচ্ছে তার বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করা এবং তাদের জন্য আন্তজাির্তক মহলের সাহায্য এবং বিদেশ থেকে যেসব শ্রমিক নিযাির্তত/ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসে তাদের বা পরিবারের জন্য (মৃত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে) ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারের পক্ষ থেকে সাবির্ক সহায়তা করা। আমরা মনে করি এসব দাবি যৌক্তিক। এ ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের মনোযোগ দেয়া উচিত। সবার আগে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, দিতে হবে আইনি সুরক্ষা। পাশাপাশি শ্রমিকদের কমর্পরিবেশের দিকেও সমান মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ এ ব্যাপারে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।