ট্রেনে কাটা পড়ে মৃতু্য

সুষ্ঠু পদক্ষেপ দরকার

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রেলপথে থেমে নেই দুর্ঘটনা। অসাবধানতা থেকে শুরু করে যখন নানা কারণেই দুর্ঘটনা নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়, তখন তা কতটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে, বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি জানা গেল, রংপুরের কাউনিয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক যুবক মারা গেছেন। রোববার সকালে উপজেলার মীরবাগ রেলস্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস সকাল ৭টার দিকে মীরবাগ রেলস্টেশন হয়ে কুড়িগ্রাম যাচ্ছিল। এ সময় মীরবাগ রেলস্টেশনের কাউনিয়া আউট সিগনালের পাশে ওই যুবক অসাবধানতাবশত রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আমরা বলতে চাই, যখন এভাবে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে, তখন তা নিশ্চিতভাবেই ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। আর, শুধু এ ঘটনাটি নয়- এর আগেও বিভিন্ন সময়েই ট্রেনে কাটা পড়ে মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। রেল দুর্ঘটনায় মৃতু্যর মতো বিভীষিকা নেমে আসছে একের পর এক। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আরও বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করা। মনে রাখতে হবে, শুধু যোগাযোগের উন্নয়ন ও সেবা নিশ্চিত করলেই হবে না, যাতায়াতের সার্বিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা জরুরি। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, এর আগে বিভিন্ন সময়েই রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে- আর তাতে অসতর্কতার বিষয় যেমন আলোচনায় এসেছে, তেমনিভাবে অরক্ষিত রেলক্রসিংসহ নানা বিষয় দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সামনে এসেছে। ট্রেন আসছে দেখার পরও দ্রম্নত রেললাইন পার হতে গিয়েও ঘটেছে মৃতু্যর ঘটনা। এ ছাড়া কানে এয়ারফোন লাগিয়ে রেললাইনে হাঁটার সময়ও দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে। সঙ্গত কারণেই বলা দরকার, এ সব ঘটনাতে যেভাবে অসচেতনতার বিষয়গুলো স্পষ্ট হয় তা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ফলে এগুলো আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দুর্ঘটনার কারণগুলো খতিয়ে দেখে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের এটাও মনে রাখতে হবে, দায়িত্বহীন গেটম্যান লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ না করার কারণে রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহনের সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ফলে এ সব বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সচেতন ও কাযর্কর উদ্যোগ না নিলে রেলপথের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়। প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার, ট্রেনের বগি লাইনচু্যত হওয়া, ঝুঁকিপূর্ণ রেল সেতুসহ নানা ধরনের বিষয় সামনে এসেছে। রেল সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে ট্রেন আর এ কারণে ঘটে চলেছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা- এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ রেল সেতুর কারণে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা মনে করি, রেল দুর্ঘটনার ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একের পর এক যেভাবে রেলপথে দুর্ঘটনা ঘটছে এর সামগ্রিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এবারে যে দুর্ঘটনাটি ঘটল তা আমলে নিন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ করুন। অসচেতনতার কারণে মানুষ চলে যাবে না ফেরার দেশে, কানে এয়ারফোন লাগিয়ে রেললাইনে হাঁটবে, ট্রেন আসতে দেখেও বেখেয়াল হবে- এ ধরনের চিত্র কোনোভাবেই কাম্য নয়। ফলে রেললাইনে প্রাণহানি ও দুর্ঘটনার বিষয়গুলো আমলে নিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে সামগ্রিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ছাড়া রেল ক্রসিংয়ের চারপাশজুড়ে অবৈধভাবে যানবাহন দাঁড়ানো বন্ধ করা এবং লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যানের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিশ্চিত করাসহ যথাযথ উদ্যোগ জারি রাখাও বাঞ্ছনীয়। আমরা এটাও বলতে চাই, যে কোনো ধরনের অনিয়ম বন্ধেও নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ। একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে, কেউ আহত হবে, কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করবে, কিংবা ঝরে যাবে একেকটি তরতাজা প্রাণ, এ পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। রেল দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।