৬৫ হাজার স্কুলে 'বঙ্গবন্ধু কর্নার' কর্মসূচির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হোক

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশের ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে 'বঙ্গবন্ধু কর্নার' করার কর্মসূচি নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমরা মনে করি, এ কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, কর্মসূচির যথাযথ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেল, 'বঙ্গবন্ধু কর্নার'-এ বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা বিভিন্ন বই রাখা হবে, যাতে শিশুরা শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুর জীবন, রাজনৈতিক সংগ্রাম, জেল-কারাবরণ এ সব সম্পর্কে জানতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষার্থীরা যদি শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুর জীবন, তার রাজনৈতিক জীবন-দর্শন, দেশের জন্য প্রগাঢ় মমত্ববোধ, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব- এ সব সম্পর্কে জানতে পারে তবে তা শুধু আজকের জন্য নয়, সেই চেতনা অন্যতম সম্পদ হিসেবেই বিবেচিত হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের কর্মসূচি, প্রকল্পর বাস্তবায়নে গড়িমসি, নানা ধরনের অনিয়মসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ওঠে এ বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবন সম্পর্কে জানতে শিশুদের জন্য এ কর্মসূচির সঠিক বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। ফলে এ কর্মসূচির সুষ্ঠু ও যথাযথ বাস্তবায়নই কাম্য। প্রসঙ্গত বলা দরকার, প্রথম দফায় 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'সহ আরও ৭টি বই 'বঙ্গবন্ধু কর্নার'-এ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে 'বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা' বইয়ের মেধাস্বত্ব নিয়ে বিতর্ক ওঠায় পুরো বই কেনার প্রক্রিয়াও আটকে যায়। এরপর পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে গত ২৬ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি উপকমিটি গঠন করে। কমিটি একাধিক বৈঠক করে বই কেনায় কোনো অনিয়ম পায়নি- এই মর্মে জার্নি মাল্টিমিডিয়াকে দায়মুক্তি দিয়েছে। ফলে বঙ্গবন্ধু কর্নারে বই কেনায় আর কোনো বাধা রইল না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া এমন তথ্য উঠে এসেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রাথমিক স্কুলে 'বঙ্গবন্ধু কর্নার' কর্মসূচির জন্য ৫ বছরে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার বই কেনার পরিকল্পনা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর মধ্যে চলতি বছর ২৮ কোটি বই কেনার অনুমতি দিয়েছে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাকি বই পরের বছরগুলোতে কেনা হবে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানা গেছে- একজন লেখকের একটি করে বই ৬৫ হাজার কপি করে কিনে স্কুলে বিতরণ করা হবে। আমরা মনে করি, এ বিষয়গুলোর যেন সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হয়, কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি না হয় তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এ ছাড়া উলেস্নখ্য, চলতি বছর শিশু একাডেমি ও বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা ৩৮টি বই কেনার অনুমতি দেয় গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর মূলত সেই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বই 'বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা' বইটি নির্বাচিত হয়। আমরা সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, শিশু-কিশোররা অত্যন্ত কোমল মনের, তাই তাদের জন্য 'বঙ্গবন্ধু কর্নার' তৈরির কর্মসূচির বিষয়টি যেমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বই পাঠের পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ সার্বিক বিষয়গুলো আমলে নিয়েও সংশ্লিষ্টদের যথাযথ তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে তৎপর থাকতে হবে। এ ছাড়া এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের অনিয়ম না হয় সেই বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আমলে নিতে হবে। আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ- সঙ্গত কারণেই তাদের সুষ্ঠু বিকাশে ও যথাযথ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। এটা মনে রাখা দরকার, শিশু শিক্ষার্থীর বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তারা কী বই পড়ছে, কীভাবে মিশছে, তাদের মানসিক পরিস্থিতি কী, বেড়ে ওঠার অনুষঙ্গগুলো কী কী, এ সব বিষয়কে সামনে রেখে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জরুরি। আর তাই শৈশব থেকে বঙ্গবন্ধুর জীবনকে শিশু শিক্ষার্থীরা যদি সঠিক ও সুন্দরভাবে জানতে পারে তবে এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। আর তাই এ কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নের দিকটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সামগ্রিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুক এমনটি কাম্য।