কঠোর পদক্ষেপ নিন

৭ কেজি স্বর্ণের বার উদ্ধার

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কোনোভাবেই স্বর্ণের চোরাচালান রোধ করা যাচ্ছে না। কিছুদিন পরপরই ধরা পড়ছে স্বর্ণের বার। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় সাত কোজি স্বর্ণের চালানসহ এক যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। আটক যাত্রীর নাম মোহাব্বত আলী। বুধবার সকালে তাকে আটক করে ঢাকা কাস্টম হাউসের প্রিভেন্টিভ টিম। প্রিভেন্টিভ টিমের তথ্য অনুযায়ী, মোহাব্বত আলী সকালে দুবাই থেকে ঢাকায় আসেন। তার কাছ থেকে সোনার ৬০টি বার পাওয়া যায়, যার ওজন ৬ কেজি ৯০০ গ্রাম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চোরাচালান প্রতিরোধে কাস্টম হাউস ঢাকার প্রিভেন্টিভ টিমে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে দুবাই থেকে আসা ফ্লাইট নম্বর-ইকে-৫৮২-এ আসা যাত্রী মোহাব্বত আলীর কাছে লুকানো স্বর্ণের ৬০টি বার পাওয়া যায়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৫ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এটা আমাদের জন্য এক বিপজ্জনক বার্তা। আমাদের স্মরণে রাখা দরকার, এ ক্ষেত্রে কাজ করছে বড় ধরনের দেশি ও বিদেশি সিন্ডিকেট। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক চক্র বাংলাদেশকে স্বর্ণ চোরাচালানের বড় ধরনের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। এর আগে এমন খবরও সামনে এসেছে, যাদের চোরাচালান রোধ করার দায়িত্ব তাদের মধ্যেও কেউ কেউ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে। তখন চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছিল গোয়েন্দারা। বলা দরকার, বাংলাদেশে স্বর্ণ চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করতে চোরাচালানকারীরা তৎপর তা বিভিন্ন সময়ের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট হয়। এর আগেও হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিভিন্ন সময়ে স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। প্যান্টের ভেতর, কম্বলের ভেতর কিংবা বিমানের টয়লেটে, এমনকি যাত্রীর জুতায়, মানিব্যাগে, লাগেজে, হ্যাঙ্গার গেটে সর্বত্রই পাওয়া গেছে স্বর্ণের বার বিভিন্ন সময়ে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তলস্নাশি চালিয়েও উদ্ধার করছে স্বর্ণের বার। দেশের সীমান্ত এলাকায়ও ধরা পড়ছে স্বর্ণের চোরাচালান। আমরা মনে করি, এ ধরনের ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হতে হবে। কেননা, এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে তা দেশের জন্য বিপজ্জনক। এটা দেশের ভাবমূর্তিরও প্রশ্ন। ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। যারা স্বর্ণের চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত তারা রাতারাতি ধনী হতে চায় এবং তারা দেশ ও জাতির শত্রম্ন, মানুষের শত্রম্ন। কেননা, এর ফলে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা মনে করি, এটা খুবই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং এ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। দেশ থেকে চোরাচালান একেবারেই বন্ধ হোক এমনটি সবার কাম্য। আর সে জন্য সক্রিয় হতে হবে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদেরই। স্মরণে রাখতে হবে, চোরাচালান রোধের দায়িত্ব যাদের, তারা যদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তা হলে সমস্যার সমাধান হবে কীভাবে? আর কীভাবেই বা চোরাচালান রোধ হবে? আমরা মনে করি, স্বর্ণের চোরাচালানসংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে স্বর্ণের চোরাচালান রোধ করতে।