রপ্তানি আয়ে হেঁাচট

প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অজের্নর প্রশ্নে রপ্তানি আয়ের ভূমিকা অপরিসীম। সঙ্গত কারণেই যদি রপ্তানি আয় হেঁাচট খায়, তবে তা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে; যা আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। জানা যায়, সুখবর নিয়ে অথর্বছর শুরু হলেও দ্বিতীয় মাসে এসেই বেশ ধাক্কা খেয়েছে রপ্তানি আয়। তথ্য মতে, অথর্বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি আয় করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় মাস আগস্টেই তা হেঁাচট খেয়েছে। এই মাসে গত বছরের আগস্টের চেয়ে আয় কমেছে প্রায় ১২ শতাংশ। এ ছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার যে, সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া সমীচীন, রপ্তানিকারকরা বলছেন, কোরবানি ঈদের কারণে কয়েক দিন পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় উৎপাদন থেকে শুরু করে রপ্তানি কাযর্ক্রম ব্যাহত হয়েছে। সে কারণেই রপ্তানি কমেছে। পরের মাসগুলোতে রপ্তানি বাড়বে এমন প্রত্যাশার বিষয়টিও সামনে এসেছে। মঙ্গলবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অথর্বছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৬৭৯ কোটি ৫০ লাখ (৬.৭৯ বিলিয়ন) ডলার করেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি; লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। প্রথম মাস জুলাইয়ে আয় হয়েছিল ৩৫৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার। আগস্টে হয়েছে ৩২১ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছিল প্রায় ৭ শতাংশ। আমরা উল্লেখ করতে চাই, ইপিবির তথ্য পযাের্লাচনায় দেখা যায়, জুলাই-আগস্ট সময়ে মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ দশমিক ৪০ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। অথার্ৎ ৬৭৯ কোটি ৫০ লাখ ডলারের মধ্যে ৫৭৩ কোটি ৫১ লাখ ডলারই এখাত থেকে এসেছে। ফলে এটা স্বাভাবিক বিষয় যে, দেশের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ এবং অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে তৈরি পোশাক খাতের বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ জারি রাখতে হবে। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীষর্ সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি বলেছেন, শুরুটা খুব ভালো হয়েছিল। কিন্তু ঈদের কারণে ২০ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পযর্ন্ত অধিকাংশ কারখানা বন্ধই ছিল বলা যায়। সে কারণেই আগস্টে রপ্তানি আয় ধাক্কা খেয়েছে। ফলে এই ধাক্কা কাটিয়ে অথর্বছরের বাকি মাসগুলোতে আয় বৃদ্ধি হোক এমনটি কাম্য। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখা দরকার, তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে কারখানা উন্নত কমর্পরিবেশেসহ প্রয়োজনীয় যে কোনো ধরনের সংকট থাকলে তাও নিরসন করতে হবে, যেন বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা এবং আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পায়। বলা দরকার, অন্যান্য পণ্যের মধ্যে জুলাই-আগস্ট সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ। হিমায়িত মাছ রপ্তানি কমেছে ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ। চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ২৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। চা রপ্তানি কমেছে ৯৪ শতাংশ। তবে স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানি বেড়েছে ২৪ শতাংশ। ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে ১৯ শতাংশ। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, যেসব পণ্যে রপ্তানি কমছে, সেগুলোর কারণ শনাক্ত করা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নিতে হবে, সম্ভাবনাময় অনেক রপ্তানিযোগ্য পণ্য আছে সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে, অথর্বছরের বাকি মাসগুলোতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সবার্ত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবেÑ এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।