২৮ জন গ্রেপ্তার

মাদকের ভয়াবহ বিস্তার রোধ করুন

প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাদকের ভয়াবহ বিস্তার দেশের সবাইকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। অবাক ব্যাপার যে, এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশও। এর মধ্যে বেশ কজন পুলিশ চাকরি হারিয়েছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীতে মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার ভোর ৬টা থেকে রোববার ভোর ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ২ হাজার ৩১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১০৬ গ্রাম হেরোইন, ৩৮ বোতল ফেনসিডিল, ৫ কেজি ৭০০ গ্রাম গাঁজা, ৫টি নেশাজাতীয় ইনজেকশন ও ২ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া মাদকাসক্তির প্রমাণ পাওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের দশ সদস্যকে চাকরিচু্যত করা হয়েছে। বর্তমান পুলিশ কমিশনার গত বছর সেপ্টেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশ সদস্যদের ডোপ টেস্ট করার ঘোষণা দেন। পুলিশ সদস্যদের পর্যায়ক্রমে ডোপ টেস্ট করা হয়। তাতে এ পর্যন্ত ৬৮ জনের মাদক নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা রীতিমতো বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জন এসআই, একজন সার্জেন্ট, ৫ জন এএসআই, ৫ জন নায়েক এবং ৫০ জন কনস্টেবল। তাদের মধ্যে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের বিভাগীয় মামলা করা হয় এবং ১৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মামলা নিষ্পত্তি শেষে ওই ১৮ জনের মধ্যে ১০ জনকেই চাকরিচু্যত করা হয়েছে। কেবল মাদক সেবন নয়, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকা, মাদক দিয়ে কাউকে ফাঁসানো, উদ্ধার করা মাদক জব্দ তালিকায় কম দেখানোর মতো অভিযোগও রয়েছে এ পুলিশ সদস্যদের কারও কারও বিরুদ্ধে। মাদকের ব্যাপারে সরকারের রয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। এখানে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। পুলিশ মাদকচক্র থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসুক এটা সবার প্রত্যাশা। পুলিশের যারা মাদকের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া উচিত হবে না। কারণ এটা পুলিশের ভাবমূর্তির প্রশ্ন। উলেস্নখ্য, দেশে প্রতি বছর মাদকের পেছনে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি। বর্তমানে শিশু ও নারীদের মধ্যে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে ইয়াবা ছেলেদের মতো মেয়েরাও অবলীলায় গ্রহণ করছে। বিগত ১০ বছরে মাদকাসক্তির কারণে ২০০ মা-বাবা খুন হয়েছেন। এটা সমাজের জন্য এক বিপজ্জনক বার্তা। মনে রাখতে হবে, মিয়ানমারের সঙ্গে মাত্র ২৭১ কিলোমিটারের সীমান্তের সবচেয়ে সক্রিয় মাদক রুটগুলো গোটা দেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ঢুকছে কোটি কোটি ইয়াবা। বেশির ভাগ ইয়াবা তৈরি হয় মিয়ানমার-চীন সীমান্তের শান এবং কাচিন প্রদেশে। মাদকপাচার, বেচাকেনার ক্ষেত্রে নারীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে দেশের অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। সরকারের পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে পুলিশসহ দেশের যুবসমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে।