শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতি

নির্মূলে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি
নতুনধারা
  ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশ এখনো মুক্ত হতে পারেনি। বাংলাদেশ এক সময় দুর্নীতির জন্য পর পর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দুর্নীতির সেই কলঙ্ক-তিলক মোচন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি এটা যেমন সত্য, একইভাবে সত্য যে, আমরা সমাজ-রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে পারিনি। যার কারণে আমাদের আশানুরূপ উন্নতি অগ্রগতি হয়নি। এটা আমাদের জাতীয় ব্যর্থতা। এমন পরিস্থিতিতে বিগত কয়েক বছরে দেশে দুর্নীতি কিছুটা কমেছে দাবি করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি যে শুধু সরকারি খাতে তা নয়- সর্বব্যাপী দুর্নীতির বিস্তৃতি রয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। দুর্নীতির বিষয়ে আমরা যেমন কঠোর, সরকারের কমিটমেন্টও কঠোর। তিনি এও বলেছেন, দুদকের প্রতি ৮৬ শতাংশ মানুষের আস্থা দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা ঠিক. জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে দুর্নীতি শনাক্তকরণ, অনুসন্ধান, তদন্ত ও প্রসিকিউশন নিখুঁতভাবে করার কোনো বিকল্প নেই। কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতিপরায়ণদের কাছে এ বার্তা পৌঁছাতে হবে, দুর্নীতি করলে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। কঠোর শাস্তি পেতে হবে। তবে জনহয়রানি যাতে না ঘটে, সে ক্ষেত্রে অপরাধী শনাক্তকরণে সতর্কতার সঙ্গেই দুদকের দায়িত্ব পালন করা উচিত। এ ক্ষেত্রে দুদককে স্বচ্ছ থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

এটা সত্য, দুদকের বর্তমান কার্যক্রমে দেশের মানুষ আশাবাদী। দুদক এ ব্যাপারে বেশ কঠোর। দেশে এমনকি বিদেশে পালিয়েও শান্তিতে থাকতে পারবে না দুর্নীতিবাজরা। দুদক তাদের পিছু ছাড়বে না। এ ক্ষেত্রে কারও ব্যক্তিগত পরিচয়, সামাজিক, পেশাগত, ধর্মীয় অন্য কোনো পরিচয়ে কাজ হবে না। দুদকের এমন কঠোর মনোভাব দুর্নীতি নির্মূলের ক্ষেত্রে বেশ ইতিবাচক। বাংলাদেশে প্রতি বছর দুর্নীতির মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ আয়-রোজগার করা হয়, তার আসলে সঠিক কোনো তথ্য-উপাত্ত কারও কাছে নেই। তবে দুর্নীতি নিয়ে যে সব সরকারি-বেসরকারি সংস্থা কাজ করে, তাদের ধারণা এ সংখ্যা লাখো কোটি টাকার কম নয়।

দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে তার রয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। ইতিমধ্যে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারত। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি বড় বাধা। দুর্নীতির কারণেই আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতিতে এমনভাবে জড়িয়ে পড়েছেন, তাদের বেতন দ্বিগুণ করেও কোনো লাভ হয়নি। তাদের অতি লোভী মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরকারি কোনো কাজের জন্য দশ জায়গায় ধরনা দিতে হয়। ঘুষ দিতে হয় প্রতিটি টেবিলে। এ চিত্র হতাশাজনক। তবে এখন যে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে এটা তো নতুন কিছু নয়। দুর্নীতি বাংলাদেশে আগেও ছিল এখনো আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বেঁচে থাকার জন্য মানুষের কত টাকা প্রয়োজন। দেশের সবাই যদি অবৈধভাবে কোটিপতি হতে চায় তা হলে এটা একটা বিপজ্জনক বার্তা। দুর্নীতি দমনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জরুরি। দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাশালী ও গর্বিত দেশ। আমাদের সেদিকেই অগ্রসর হওয়া জরুরি এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে