করোনার টিকা যথাযথ উদ্যোগ নিন

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্ব কতটা ভয়ানক এবং বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি শক্তিধর দেশগুলোকেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। একই সঙ্গে দেশেও করোনার সংক্রমণ ও করোনায় মৃতু্য থেমে নেই। এমন অবস্থায় আলোচনায় আসছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি। আর এরই মধ্য জানা গেল, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ এর ৩ কোটি ডোজ টিকা সরকার কিনতে যাচ্ছে, যা মানুষকে বিনা মূল্যে দেওয়া হবে। যদিও কারা আগে পাবে, তা ঠিক হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা গেছে, ইতিমধ্যে এ টিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার, সেরা ইনস্টিটিউট ইন্ডিয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এ টিকা কেনার জন্য ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তিন কোটি টিকা সরকার কিনবে; কিন্তু মানুষ বিনা মূল্যে পাবে। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ্য, এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ এর তিন কোটি ডোজ টিকা কিনবে বাংলাদেশ। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, করোনার টিকা নিয়ে নানা রকম গবেষণা চলে আসছিল, বিজ্ঞানীরা টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা করছিল অনেকদিন ধরে। এর পর বিভিন্ন দেশই টিকা তৈরির দাবি করে, এবং করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর কতটা সে বিষয়ে তথ্য আসে গণমাধ্যমে। আমরা মনে করি, করোনা প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতার বিষয় যেমন গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি টিকা না আসা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা বা করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার বিষয় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। তথ্য মতে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ এর কোটি টিকা দুই থেকে আট ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য, যা বাংলাদেশে বিদ্যমান। প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা হবে। টিকার পর্যায়ভিত্তিক প্রাপ্যতা বিবেচনা করে প্রাথমিকভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী, তথা কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী এবং গণপরিবহণকর্মীরা টিকাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন এমনটি জানা গেছে। আমরা বলতে চাই, টিকা আসার পর এর সুষ্ঠু বণ্টনসংক্রান্ত সামগ্রিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। একই সঙ্গে করোনা প্রতিরোধ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি, মাস্ক পরার বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে। যদিও করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার। জানা গেছে, এখন থেকে মাস্ক না পরলে সর্বোচ্চ জরিমানা করা হবে। এভাবে দেখা হবে ৭ থেকে ১০ দিন। এরপরও মাস্ক না পরলে জেলের বিধান কার্যকর করা হতে পারে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, গত ডিসেম্বর চীনের উহান থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ক্রমেই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসছে এর দ্বিতীয় প্রবাহের বিষয়টি। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের তথ্য মতেও জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখে পুরো বিশ্ব। নিয়ন্ত্রণে আসা ইউরোপে করোনাভাইরাস ফের ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ইংল্যান্ড-ইতালিসহ নানা দেশে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ এর যে ৩ কোটি ডোজ টিকা সরকার কিনতে যাচ্ছে, তা মানুষকে বিনা মূল্যে দেওয়ার বিষয়টিসহ এর সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত হবে এটি কাম্য। একই সঙ্গে মনে রাখা দরকার, করোনাভাইরাসের কারণে নানামুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা আসছে, সঙ্গত কারণেই সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। টিকার বিষয়টি আমলে নেওয়ার পাশাপাশি- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করা, মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতা এ সময়টা অত্যন্ত জরুরি। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখুক এমনটি কাম্য।