বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

করোনায় দারিদ্র্য বেড়েছে

নতুনধারা
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এর প্রভাব পড়েছে সব ক্ষেত্রেই। বিপর্যস্ত হয়েছে অর্থনীতি। থমকে গেছে একেকটি খাত। মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হয়েছে। কার্যত সারা বিশ্বই সংকটজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে করোনার কারণে। এমন অবস্থায় সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। আর এ সব মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আগামী বছরের শুরু থেকেই বিভিন্ন দেশের হতদরিদ্র মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন হবে। আর এ সব সহায়তামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে জাতিসংঘের ৩ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন বলেও জানা গেছে। তথ্য মতে, জাতিসংঘ ২০২১ সালে ৫৬টি দেশে মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দিতে ৩৪টি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সংস্থাটি এর মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে চায়।

আমরা বলতে চাই, এর আগেও জাতিসংঘ সতর্ক করেছিল এই বলে যে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্ব ব্যাপক দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে আছে। এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিস্নউএফপি) সতর্ক করে সে সময় বলেছিল, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট বিশ্বজুড়ে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করতে পারে। সঙ্গত কারণেই যখন বিশ্বে অভাবী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে তখন এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। আর এ জন্য বিশ্ব নেতৃত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না। উলেস্নখ্য, জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় সাড়ে ২৩ কোটি মানুষকে ক্ষুধা, যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, করোনাভাইরাসের কারণে যে দারিদ্র্য বাড়ছে এবং খাদ্য সংকট থেকে শুরু করে নানামুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, যখন মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। তখন দেশের সংশ্লিষ্টদেরও এ বিষয়টি আমলে নিতে হবে। এর আগে জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকেই নিম্ন-আয়ের বহু মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। ক্রমে ক্রমে বেকার হচ্ছে নিম্ন-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তদেরও অনেকে- এমনটিও উঠে এসেছিল। এ ছাড়া করোনা মহামারির মুখে দেশে বেকার হয়ে পড়া নিম্ন-আয়ের অনেক মানুষকেই পথে পথে সাহায্য চাইতে বা ভিক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে- এটাও আলোচনায় আসে। অভাবী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এবং পরিবারের উপার্জন কমছে- এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে, যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। মনে রাখা জরুরি, এর আগে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির গবেষণা, মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণবিষয়ক একজন পরিচালক বলেছিলেন, দিন আনে দিন খায় এমন মানুষের সুরক্ষায় শিগগিরই পদক্ষেপ না নিতে পারলে বিপদ মারাত্মক আকার ধারণ করবে। ফলে আমরা মনে করি, দেশের অভাবী ও নিম্ন-আয়ের মানুষের জীবনযাপনের বিষয়টি খতিয়ে দেখেও ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা বলতে চাই, যখন বিশ্বে দারিদ্র্য বাড়ছে- তখন এ বিষয়টিকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এরই প্রাসঙ্গিকতায় দেশের সংশ্লিষ্টদেরও সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথ উদ্যোগ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা বলতে চাই, করোনার সংক্রমণ ও মৃতু্য থেমে নেই। একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, অন্যদিকে দারিদ্র্য বাড়ছে- এ পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য।

সর্বোপরি বলতে চাই, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে এবং এ সব মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন হবে- এ বিষয়টিকে কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই। জাতিসংঘ সহায়তামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে যে সব উদ্যোগ নিয়েছে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক, একই সঙ্গে সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকবিলায় বিশ্ব নেতৃত্ব এগিয়ে আসুক। করোনা পরিস্থিতি মোকবিলার সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্র মানুষের সহায়তার দিকটি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে