বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
কার্যকর উদ্যোগ নিন

করোনায় মৃতু্য ১৫ লাখ

নতুনধারা
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত ও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে। উলেস্নখ্য, হু-হু করে বাড়তে থাকায় আক্রান্তের সংখ্যাও সাড়ে ৬ কোটি পেরিয়ে গেছে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা 'ওয়ার্ল্ডোমিটার'র তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা ১৫ লাখ ২ হাজারেরও বেশি। বলার অপেক্ষা রাখে না, গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। এটা পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, যত সময় গড়াচ্ছে ততই মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এরই মধ্য ভ্যাকসিন তৈরির খবর আসছে এবং করোনা প্রতিরোধে কতটা কার্যকর সেই বিষয়গুলোও আলোচনায় আসছে। আমরা মনে করি, এখন সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করা।

তথ্য মতে, বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর মৃতু্য বিবেচনায় করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিল। আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে থাকলেও মৃতু্য বিবেচনায় দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারত মৃতু্য বিবেচনায় আছে তৃতীয় স্থানে। বলা দরকার, করোনার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, পত্রিকায় এমন বিষয় উঠে এসেছে যে, প্রথমদিকে করোনাভাইরাস মহামারিকে হেলাফেলা করার পরিণাম টের পাচ্ছে তারা। বর্তমানে বিশ্বে করোনায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত-মৃতু্যর রেকর্ডও যুক্তরাষ্ট্রের। অর্থনীতিতেও লেগেছে জোর ধাক্কা। মাঝে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও দেশটিতে গত কয়েক সপ্তাহে আবারও হু-হু করে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃতু্যও। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি করোনাভাইরাস মহামারির সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখে পুরোবিশ্ব এমনটিও আলোচনায় এসেছে। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, নিয়ন্ত্রণে আসা ইউরোপে করোনাভাইরাস ফের ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। ইংল্যান্ড-ইতালিসহ নানা দেশে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ার বিষয়টিও জানা যায়। আমরা মনে করি, করোনা প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিদের্শনার বাস্তবায়ন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। প্রায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা এই ভাইরাস যেভাবে বিস্তার ঘটিয়ে কেড়ে নিচ্ছে মানুষের প্রাণ, তা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

বলার অপেক্ষা রাখে না, যখন সারা বিশ্বেই কারোনভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংক্রমণ বাড়ছে, তখন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাসহ বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রাখতেও উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়া সময় যত গড়াচ্ছে ততই মানুষ মাস্ক পরায় আগ্রহ হারাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানছেন না, এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। মহামারি করোনাভাইরাসের থাবা থেকে বাঁচতে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা নিয়ে সম্প্রতি আরও কড়া নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। নতুন এ নির্দেশনায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের বিস্তার ঘটা এলাকাগুলোর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের প্রত্যেকেরই মাস্ক পরা এবং ভালো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই এমন ঘরেও অবশ্যই মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।

সর্বোপরি বলতে চাই, শুধু বিশ্বের অন্যান্য দেশেই নয়, বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণ ও করোনায় মৃতু্য থেমে নেই। ইতোমধ্যে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে করোনায়। ফলে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে দেশের সংশ্লিষ্টদেরকেও। একদিকে দেশের জনসংখ্যা বেশি, অন্যদিকে প্রস্তুতি কতটা এবং মানুষের সচেতনতার চিত্র আমলে নিয়ে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সারা বিশ্বের করোনা-পরিস্থিতি বিশ্লেষণ সাপেক্ষে বিশ্বনেতৃত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ জারি রাখারও বিকল্প নেই। ভুলে যাওয়া যাবে না, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘুরাফেরা না করাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতা এ সময়টা অত্যন্ত জরুরি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ও যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে