রোধ করতে হবে

জাল টাকার বিস্তার

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না জাল টাকার বিস্তার। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ টাকার জাল নোটসহ তিন জনকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে তাদের আটক করে ডিবির তেজগাঁও বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়িচুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম। আটকরা হলেন- মো. সুমন মিয়া (৩০), মো. বিপস্নব হোসেন (৩২) ও মো. রাজিব শিকদার (৩৫)। তারা জাল নোটগুলো পস্নাস্টিকের ব্যাগে করে বহন করছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। মুদ্রা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতরা এ কাজে বেশ 'অভিজ্ঞ' এবং তারা গ্রেপ্তার হলে আইনের ফাঁক-ফোকরে জামিন নিয়ে বেরিয়ে একই কাজে ফের সম্পৃক্ত হয়। তাদের স্বপ্ন রাতারাতি বিশাল বিত্ত-বৈভবের মালিক হওয়া। তারা আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে আবার একই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'যাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি, তাদের অতীত ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে আগেও বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছে, তারপর জামিনে বেরিয়ে তারা আবার একই কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে।' মুদ্রা জাল করার সঙ্গে জড়িত অধিকাংশই জামিনে বেরিয়ে আসছে। জাল মুদ্রার কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা হলেও অপরাধীদের অধিকাংশই খালাস পেয়ে যায়। বিশেষ ক্ষমতা আইনের এবং দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় জাল নোট তৈরি, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়ে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আসামিরা খালাস পেয়ে যায়, কারণ সাক্ষীর অভাব। যে এলাকা থেকে জাল নোটের কারবারিকে ধরা হলো সেই এলাকায় স্থানীয় কাউকে সাক্ষী করা হলো। সেই সাক্ষী দুই-একবার আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসার পর পরে আর আসেন না। তো দেখা গেল সাক্ষীর অভাবে আসামি খালাস পেয়ে গেল। মুদ্রা জালকরণ, প্রস্তুত, ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দন্ডবিধি কয়েকটি ধারায় মামলা করা হলেও পুরনো আইনের 'দুর্বল ধারার' কারণে অপরাধীরা বেরিয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া মতামতের গ্রহণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। 'জাল মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ আইন-২০২০' খসড়ায় মুদ্রা জালকরণ, ক্রয়-বিক্রয়সহ ১৪ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার দায়ে সর্বনিম্ন দুই বছর কারাদন্ড বা এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড এবং সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন বা এক কোটি টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। পুরাতন আইনে জাল মুদ্রার কারবারি ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায় আসামিরা। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ,র্ যাব ও আনসার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। নোট যাচাইকালে জাল নোট ধরা পড়লে সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা মনে করি, এখন নতুন যে আইন হচ্ছে সেই আইনে বিচারের পদ্ধতি যেন সহজ হয়। তিন মাসের মধ্যে এ সব অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে পারলে অপরাধীরা সাজা পাবে এবং এ অপরাধ কমে আসবে।