১০ বছরে প্রবাসী আয় চার গুণ

অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকুক

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের অথৈর্নতিক অগ্রগতির প্রশ্নে প্রবাসী আয়ের ভ‚মিকা অনস্বীকাযর্। সঙ্গত কারণেই যখন প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়, তখন তা অত্যন্ত ইতিবাচক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বতর্মান সরকারের পর পর দুই মেয়াদের শাসনামলে গত ১০ বছরে আগের ১০ বছরের তুলনায় প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় চারগুণ। তথ্য মতে, ২০০৮-০৯ অথর্বছর থেকে বিদায়ী ২০১৭-১৮ অথর্বছর পযর্ন্ত ১০ অথর্বছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ হাজার ১৮৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার। এর আগের ১০ অথর্বছরে (১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০০৭-০৮ অথর্বছর পযর্ন্ত) রেমিট্যান্স এসেছিল ৩ হাজার ৩৬৬ কোটি ৪২ লাখ ডলার। আমরা মনে করি, অগ্রগতির এই বিষয়টি অত্যন্ত সুখকর। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার, অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। লক্ষণীয় যে, সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কমর্সংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কমর্কতার্রা দীঘির্দন ধরেই দাবি করে আসছেন যে, বিদেশে কমীর্ যাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ ও সুলভ করার পাশাপাশি রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর ড্রয়িং অ্যারেঞ্জমেন্ট, বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউস ও শাখা খোলা, রেমিট্যান্সের অথর্ দ্রæত সময়ের মধ্যে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেয়ার নিদের্শনা জারিসহ বেশকিছু উদ্যোগের ফলে রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে আগামী দিনে সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যেন যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের ফলে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকে। জনশক্তি কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ সাল থেকে চলতি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পযর্ন্ত ১০ বছরে দেশ থেকে ৬০ লাখ ৭৩ হাজার ৯৬৯ জন কমীর্ বিদেশে গেছে। যেখানে ১৯৭৬ থেকে ২০০৭ সাল পযর্ন্ত ৩১ বছরে বিদেশে যাওয়া কমীর্র সংখ্যা ছিল ৫৩ লাখ ৯০ হাজার ৯৭৪। আর এক বছরের হিসাবে সবচেয়ে বেশি কমীর্ বিদেশে গেছে গত বছর। এ সংখ্যা ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫। এ ছাড়া চলতি বছরের আগস্ট পযর্ন্ত বিদেশে যাওয়া কমীর্র সংখ্যা ৫ লাখ ৬৯৪। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ বিপুল জনসংখ্যার দেশ। ফলে এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করার সামগ্রিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি। মনে রাখা দরকার, যত বেশি দক্ষ জনশক্তি তৈরি সম্ভব হবে ততই নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি হবে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আমাদের জনশক্তির প্রতি আরও বেশি আগ্রহ দেখাবে। উল্লেখ্য, বিদেশে যাওয়া সবচেয়ে বেশি কমীর্ রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। ফলে ওই দেশগুলো থেকেই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসছে। আমরা বলতে চাই, রেমিট্যান্স বাড়লে তা দেশের অথৈর্নতিক সমৃদ্ধি অজের্নর পথে সহায়ক হবে। ফলে সংশ্লিষ্টদের নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টিতে কাজ করা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কমর্রতদের সম্পকের্ খেঁাজখবর রাখা, যে কোনো সংকট সৃষ্টি হলে তা নিরসনে প্রয়োজনীয় সহায়তাসহ কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, ক‚টনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ, দক্ষ জনশক্তি প্রেরণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপসহ নানা কারণেই রেমিট্যান্স বেড়েছে, যা অত্যন্ত আশাপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। এর পাশাপাশি এটাও মনে রাখা সমীচীন যে, প্রবাসে নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে, অনেকেই বৈধতা হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি আমিরাতে বাংলাদেশিরা ভালো নেই এমন খবরও সামনে এসেছে। ফলে এই বিষয়গুলোকেও সংশ্লিষ্টদের আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আরও বেশি দক্ষ জনশক্তি প্রেরণ এবং প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।