শিশুমৃত্যু

কাযর্কর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সঙ্গত কারণেই শিশুদের সাবির্ক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। যদি প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে না পারার কারণে শিশুর মৃত্যু হয়, কিংবা শিশুদের সুরক্ষা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েÑ তবে তা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। ফলে বিষয়টি আমলে নেয়া অপরিহাযর্ বলেই প্রতীয়মান হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, ২০১৭ সালে বিশ্বে ১৫ বছরের কম বয়সী ৬৩ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গড়ে প্রতি ৫ সেকেন্ডে মৃত্যু হয়েছে একজন করে শিশুর। আমরা মনে করি, বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেননা মঙ্গলবার ইউনিসেফ, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত এক যৌথ প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়েছে যে, বিশুদ্ধ পানির অভাব, পুষ্টিহীনতা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষার অভাব ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকাই এসব শিশুর অধিকাংশের মৃত্যুর কারণ। আমরা বলতে চাই, যখন সভ্যতা এগিয়ে চলেছে, নিত্য নতুন উদ্ভাবনে গতিশীল হচ্ছে জীবন-ব্যবস্থা; তখন বিশুদ্ধ পানির অভাব, পুষ্টিহীনতা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসুরক্ষার অভাব ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকার কারণে শিশুরা মারা যাবে এটা অত্যন্ত পরিতাপের জন্ম দেয়। আমলে নেয়া দরকার, জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে এটাও বলা হয়েছে যে, প্রাণ হারানো শিশুদের একটা বড় অংশের বয়স ৫ বছরের কম, সংখ্যার হিসাবে যা ৫৪ লাখ। আর এদের অধের্কই সদ্যোজাত শিশু। জাতিসংঘের শিশু অধিকারবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের একজন বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ, বিদ্যুৎ ও টিকার মতো সহজ ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করা গেলেই এ মৃত্যুর হার বিপুল পরিমাণে কমানো সম্ভব। এ ছাড়া বিবেচ্য বিষয় হলো, তিনি সতকর্ করেছেন যে, দ্রæত ও কাযর্কর ব্যবস্থা না নিলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ কোটি ৬০ লাখ শিশু প্রাণ হারাতে পারে, যার অধের্কই হতে পারে সদ্যোজাত। আমরা বলতে চাই, শিশুরা সাবির্ক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের উল্লিখিত বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে কাযর্কর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যেসব কারণে শিশুরা মারা যাচ্ছে, সেগুলো সামনে রেখে সংকট নিরসনে উদ্যোগী হতে হবে। উল্লেখ্য, এমন বিষয় সামনে এসেছে যে, ২০১৭ সালে প্রাণ হারানো ৬৩ লাখ শিশুর অধের্কই আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের। সেখানে প্রতি ১৩ শিশুর মধ্যে একজন ৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই মারা যায়। এ ছাড়া প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পঁাচ বছরের কম বয়সী অধিকাংশ শিশুর মৃত্যু হয় নিরাময়যোগ্য রোগে। জন্মকালীন জটিলতা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া নিওনাটাল সেপসিসের কারণে তাদের বেশিরভাগের মৃত্যু হয়। আর পঁাচ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ মূলত শারীরিক আঘাত। বিশেষ করে পানিতে ডুবে কিংবা সড়ক দুঘর্টনায় প্রাণ হারায় তারা। সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, বিপুলসংখ্যক শিশুমৃত্যুর পরও প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শিশুমৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে গেছে। কেননা ১৯৯০ সালে ১ কোটি ২৬ লাখ শিশু পঁাচ বছর বয়স হওয়ার আগেই প্রাণ হারিয়েছে। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা দঁাড়িয়েছে ৫৪ লাখে। তবু শিশুমৃত্যুর যে চিত্র উঠে এসেছে তা কাম্য হতে পারে না। ফলে বিষয়টি আমলে নিয়ে শিশুমৃত্যুর হার কমাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। একইসঙ্গে সামগ্রিক চিত্র আমলে নিয়ে আমাদের দেশের শিশু পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হতে হবে। বিশ্বে শিশুদের বাস হোক নিরাপদ, এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।