রাজধানীতে অসহনীয় যানজট

নিরসনে পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরি

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর যানজট একটি জটিল ও দুভোর্গপূণর্ নাগরিক সমস্যা। রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য, যানজটমুক্ত ও পরিবহন খাতকে সুশৃঙ্খল করার মেগা পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয় না। এর কারণ সরকারের কৌশল ও পযার্প্ত অথৈর্নতিক বরাদ্দ না থাকা, বিভিন্ন সংস্থা, কতৃর্পক্ষ ও থাডর্ পাটির্র স্বাথর্। তবে পরিকল্পনা গ্রহণ করে স্বল্পমেয়াদেই বাস্তবায়নের নজির রয়েছে খোদ রাজধানীর গুলশান ও হাতিরঝিলে। এখান থেকেই সরকার, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কতৃর্পক্ষ (ডিটিসিএ) শিক্ষা নিতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনরা। তাদের প্রশ্ন, আমাদের সিগন্যাল বাতি জ্বলে না কেন? পুলিশ হাতের ইশারায় যা করছে সঠিক করছে। কিন্তু তা করা হচ্ছে বেআইনিভাবে। পুরো রাজধানীকে যদি ডিজিটালি সিগন্যালিং করা যায়, দক্ষ কয়েকশ’ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করা যায় তবে দ্রæতই শৃঙ্খলা ফিরবে। এই সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের উদাসীনতাই চোখে পড়ে সবচেয়ে বেশি। এটা যেন রাজধানীবাসীর জন্য অনিরাময়যোগ্য ব্যাধির মতো। সহসা নিরসন বা উপশমের কোনো লক্ষণ নেই। অথচ রাজধানীতে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরানো গেলে যানজট এমনিতেই কমে আসবে। কিন্তু সেটা সরকার, কিংবা ডিটিসিএ পারেনি। তাহলে স্বল্প ও দীঘের্ময়াদি পরিকল্পনা যাই গ্রহণ করা হোক না কেন, তার বাস্তবায়ন জরুরি। রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের ক্ষেত্রে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রান্সপোটর্ (এমআরটি) সরকারের সবোর্চ্চ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত একটি প্রকল্প হলেও এই প্রকল্পের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। এর আগে যানজট কমানোর উদ্যোগ হিসেবে রাজধানীর চারপাশে নৌ যোগাযোগব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল এক সময়। কিন্তু তার সফল বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। পরিবহন সংকটের পাশাপাশি মানুষের দুভোের্গর একটি বড় কারণ হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় রাস্তা কম থাকা। রাস্তার ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যান চলাচল করায় যানজট বহুগুণে বাড়ছে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে ভয়াবহ যানজটের কবলে রাজধানীবাসী। এটা মানুষের নিত্যদিনের সমস্যা। ট্রাফিকব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে রাজধানীবাসীকে কোনো না কোনো সময় ঘরের বাইরে বের হতেই হয়। প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস এই ঢাকায়। সেই তুলনায় পযার্প্ত রাস্তা নেই। রিকশা ও প্রাইভেট কারে চারদিক সয়লাব। এমন অবস্থায় রাজধানীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হবে এর আর বিচিত্র কী। ঘন বসতিপূণর্ রাজধানীতে মানুষ অনেক দুভোর্গ নিয়ে বাস করে। এখানে রয়েছে পানি, গ্যাস সংকট, রয়েছে আবাসন ও নিরাপত্তা সংকট। ব্যয়বহুল জীবনযাত্রায় মানুষ এখানে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে বেঁচে আছে। এসব সমস্যা ছাড়াও রাজধানীর মানুষ যে দুভোের্গর শিকার প্রতিদিনই হচ্ছে তা হলো ভয়াবহ যানজট। যাতায়াত সমস্যা এখন নগরবাসীর জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দঁাড়িয়েছে। স্কুলগামী শিক্ষাথীর্ থেকে শুরু করে চাকরিজীবী প্রতিটি মানুষকে প্রতিদিন চরম দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। এর ওপর আথির্ক ক্ষতি তো আছেই। যানজট থেকে হাসপাতালের রোগী পযর্ন্ত রেহাই পাচ্ছে না। পাশাপাশি গণপরিবহনের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে শিক্ষাথীের্দর আন্দোলনের পর থেকেই। জনমনে স্বস্তি নেই, শান্তি নেই, ভোগান্তির শেষ নেই। মনে রাখতে হবে, যানজটজনিত দুভোের্গর অবসান না হলে একদিকে যেমন মানুষের কমর্ঘণ্টা নষ্ট হবে অন্যদিকে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হবেÑ যা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। সুতরাং রাজধানীর অসহনীয় যানজট নিরসনে পরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরিভাবে গ্রহণ করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।