টাকা ব্যবহারের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

মো. আজিনুর রহমান লিমন আছানধনী মিয়াপাড়া, ডিমলা নীলফামারী
চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে। এটি টাকার গায়ে লেখা মূল্যবান একটি বাণী। টাকা পৃথিবীর মূল্যবান একটি সম্পদ। যার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল প্রকার লেনদেন করতে হয়। ঘর থেকে বের হলেই টাকার প্রয়োজন। কিন্তু সেই টাকা ব্যবহারের ব্যাপারে আমরা কতটা সচেতন? বতর্মানে কাগজের নোটের দিকে তাকালে মনে হয়, বাংলাদেশে টাকার কোনো মূল্য নেই। ছেঁড়া টাকা, পোড়া টাকা, লেখাযুক্ত টাকা, পিনযুক্ত টাকা এবং ময়লাযুক্ত টাকায় ভরে গেছে পুরো দেশ। এসব টাকা দিয়ে লেনদেন করতে অনেক কষ্ট হয়। প্রায়শই সমস্যাযুক্ত টাকার কারণে মানুষের মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। টাকা ব্যবহারে অসচেতনতার কারণেই বাংলাদেশের টাকার নাজেহাল অবস্থা। এ অবস্থার জন্য দায়ী কয়েক শ্রেণির মানুষ, যেমন নেশাখোড়, অসচেতন অভিভাবক ও এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকগুলো। নেশাখোড়রা টাকার ওপর নেশা করে টাকাকে পুড়িয়ে ফেলে। ফলে বাজারে অসংখ্য পোড়া টাকা মানুষের হাতে হাতে ঘুরছে। অসচেতন অভিভাবকরা শিশুদের হাতে টাকা দিয়ে টাকা ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যম তৈরি করছে। অনেক অভিভাবককে শিশুদের হাতে টাকা দিতে দেখা যায়। শিশুরা কাগজ মনে করে সেটাকে দুমড়ে মুছরে নষ্ট করছে। কয়েক শ্রেণির ব্যবসায়ীর হাতেও অসংখ্য টাকা নষ্ট হচ্ছে। তন্মধ্যে পানি সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী যেমন তেল ও মাছ ব্যবসায়ীর হাতে। ভেজা হাতে টাকা নিয়ে টাকাকে ভিজিয়ে মাছ ব্যবসায়ীরা যেমন টাকার মান নষ্ট করে ফেলছে, তেমনি তেল ব্যবসায়ীরা তেলযুক্ত হাতে টাকা স্পশর্ করে টাকাকে নষ্ট করে ফেলছে। এ ছাড়াও ব্যাংকগুলো টাকা নষ্ট করার বড় মাধ্যম বলে মনে করা যায়। কারণ টাকায় সিল মারা, টাকায় পিন মারা, টাকায় কাগজ দিয়ে আঠা লাগানোর মতো কাজগুলো করে থাকেন বাংলাদেশের সব ব্যাংক। ব্যাংকের এ সব কাযর্ক্রমে টাকা অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। টাকার মধ্যে লেখালেখি করাও এক শ্রেণির পÐিতকে পাওয়া যায়। যারা টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লেখালেখি করে থাকে। যে টাকা মানবজীবনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূণর্ সেই টাকাকে আমরা গুরুত্বহীনভাবে ব্যবহার করি। ময়লা হাতে টাকা ধরতেও কোনো দিধা করি না। ফলে টাকা হাত দিয়ে স্পশর্ করলে সেই হাত না ধুয়ে কোনো খাবার খাওয়া উচিত নয়। কারণ টাকার মধ্যে সকল ধরনের জীবাণু থাকে। যে জীবাণু একজন মানুষের জন্য মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ জন্য টাকা ব্যবহারের ব্যাপারে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। প্রবাদ আছে, টাকাই সকল অনথের্র মূল। কাগজের টাকা ব্যবহারের ব্যাপারে সচেতনতামূলক কোনো প্রচারণা আমরা কখনই লক্ষ্য করিনি। সরকারি কিংবা বেসরকারি মাধ্যমেও জাতীয় এই সম্পদ রক্ষার কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। গণমাধ্যমগুলোও এ ব্যাপারে কোনো ভ‚মিকা রাখে না। অথচ বিশ্বের অনেক দেশে টাকার ব্যবহারের ব্যাপারে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা থাকায় টাকা অনেক ভালো এবং সুন্দর থাকে। এ ছাড়া টাকা নষ্ট হলে সেই টাকা সহজতর মাধ্যমে বদলানোর প্রক্রিয়া থাকায় জনগণের কোনো ভোগান্তি হয় না। অথচ বাংলাদেশে নষ্ট টাকা বদলানোর সহজ কোনো প্রক্রিয়া না থাকায় অনবরত ভোগান্তি পেতে হয় জনগণকে। যাই হোক, টাকা দেশের জাতীয় সম্পদ। এই জাতীয় সম্পদকে হেলায় খেলায় ব্যবহার করছে মানুষ। ফলে কাগজের টাকার অবস্থা দিন দিন নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে। টাকা ব্যবহারের সচেতনতা বাড়াতে সরকারি প্রচারণার কোনো বিকল্প নেই। ব্যাংকগুলোকেও এ ব্যাপারে গুরুত্বপূণর্ ভূমিকা পালন করতে হবে। বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য অথর্ মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি অত্যন্ত জরুরি।