করোনাভাইরাসের টিকা

প্রয়োগ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু হোক

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিশ্ব ভয়ানক এবং বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি শক্তিধর দেশগুলোকেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। একইসঙ্গে দেশেও করোনার সংক্রমণ ও করোনায় মৃতু্যও থেমে নেই। এমন অবস্থায় করোনার টিকার বিষয়টি সামনে আসে এবং নতুন আশার সঞ্চার করে। আর যখন বিভিন্ন দেশেই টিকা প্রদান শুরু হয়েছে, তখন টিকার সুষ্ঠু বণ্টনের বিষয়টিও আলোচনায় আসছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বাংলাদেশেও টিকা আসছে। আর তাই আগামী ফেব্রম্নয়ারি মাসের শুরুতে দেশে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করতে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। 'ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম-২০২১' নামে এই টিমে সদস্য করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মকর্তাদের। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, টিকা আসার পর সেটির সুষ্ঠু বণ্টনসহ সার্বিক বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করা অপরিহার্য। ফলে, 'ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম' তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবে এমনটি কাম্য এবং ন্যায্য বণ্টনের বিষয়টিকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখাটাও অত্যন্ত জরুরি। এ কথার বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনার টিকা নিয়ে নানা রকম গবেষণা চলে আসছিল। বিজ্ঞানীরা টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টা করছিল অনেকদিন ধরে। এর পর বিভিন্ন দেশই টিকা তৈরি দাবি করে এবং করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর কতটা সে বিষয়ে তথ্য আসে গণমাধ্যমে। আমরা মনে করি, যখন আগামী ফেব্রম্নয়ারি মাসের শুরুতে দেশে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করতে 'ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম' গঠন করা হয়েছে তখন তা ইতিবাচক। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, টিমের কার্যাবলি সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন যে, সদস্যদের তত্ত্বাবধানে করোনা ভ্যাকসিনসংক্রান্ত দেশ-বিদেশের সব তথ্যের হালনাগাদ পরিসংখ্যান সংগ্রহের পাশাপাশি করোনাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও সংরক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে যোগাযোগ সমন্বয়ের কাজটিও করবে তারা। বিভিন্ন কার্যক্রম ও অন্যান্য জরুরি বিষয় প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট সচিবকে অবহিত করবে এই টিম। এছাড়া প্রশাসন উইং থেকে করোনা ভ্যাকসিন ইমারর্জেন্সি রেসপন্স টিমকে তাদের প্রয়োজনীয় সুবিধা দেওয়া হবে এবং এই কমিটি প্রয়োজনে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এর আগে কোভিড-১৯ টিকার ন্যায্য বণ্টনের জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। ফলে টিকা প্রাপ্তির পর তার ন্যায্য বণ্টনের বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মনে রাখা দরকার, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। ভাইরাসটি শনাক্তের বর্ষপূর্তির একদিন আগে ভিডিও বার্তা দেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। তিনি বলেছিলেন, 'মহামারির লাগাম টেনে ধরতে টিকা বেশ আশাব্যঞ্জক। তবে ধরিত্রীকে রক্ষায় বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে ঝুঁকিতে থাকা সবার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। নতুন বছরে আমাদের অবশ্যই এই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে।' আমরা মনে করি, যখন বাংলাদেশে টিকা আসছে এবং প্রয়োগ শুরু হবে, তখন ভ্যাকসিন প্রয়োগ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যাগ জারি রাখতে হবে। সর্বোপরি বলতে চাই, মহামারি করোনার লাগাম টানতে টিকার বিষয়টি আশাব্যঞ্জক। ফলে যখন দেশে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করতে ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে, তখন তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া মনে রাখা দরকার, করোনাভাইরাসের কারণে নানামুখী সংকট সৃষ্টি হয়েছে। করোনা সংক্রমণ এড়াতে শতভাগ মাস্কের ব্যবহারও নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, সময় যত গড়াচ্ছে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। এমনকি মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পরও মানুষ তা আমলে নিচ্ছে না এমনটিও খবরের মাধ্যমে জানা যায়। সঙ্গত কারণেই সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। টিকার বিষয়টি আমলে নেওয়ার পাশাপাশি- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করা, মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতাসহ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি প্রত্যাশিত।