বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন

চাল তেল চিনির দাম বৃদ্ধি

নতুনধারা
  ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

চাল তেলের পর এবার বাজারে বেড়েছে চিনির দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে কোম্পানিগুলো চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে আদা, রসুন ও হলুদের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে এর আগে ভোজ্য তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল- যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

দিন কয়েক আগে চাল ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেছিলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ না নেয়, সেজন্য জনমত সৃষ্টি করতে হবে। ভোজ্যতেলের ব্যাপারে আমরা অবজার্ভ করছি, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে গেছে। সেজন্যই দামের প্রভাবটা আমাদের দেশে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কী পরিমাণ বাড়ছে এবং দেশের বাজারে কী পরিমাণ বাড়ছে, সেটা খেয়াল করা হচ্ছে। যেটা আমাদের আমদানি করে চলতে হয়, সেটার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর ভরসা করতেই হবে। কিন্তু এ সুযোগটা নিয়ে কেউ যেন অতিরিক্ত লাভবান না হতে পারে, সেটা আমরা দেখভাল করব। চালের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে তার মতামত, যথেষ্ট মজুত না থাকায় দেশে চালের দাম বেড়েছে। সরকার খুব শক্ত একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা আমদানি করব। ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টন করে তিনটি কনসাইনমেন্টের এলসি ওপেন করে দিয়েছে, আরও দুটি ওপেন করবে।

হঠাৎ করে চাল-চিনি-তেলের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এটা অতি মুনাফাখোর ও লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কখনোই ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনা করে না। বিক্রেতাদের অভিমত 'আমরা বেশি মূল্য দিয়ে কিনলে কম মূল্যে বিক্রি করব কীভাবে?' বেশি মূল্য দিয়ে কিনেছে নাকি কম মূল্য দিয়ে তাদের এ বক্তব্য কি প্রমাণ সাপেক্ষ। তারা যে অজুহাত তুলেছে এ অজুহাত অত্যন্ত পুরানো।

মনে রাখতে হবে, চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে চিনি ও ভোজ্যতেলের দামও। কারণ এ তিনটি পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। করোনাকালে এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দুই বছর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ২৫০ টাকা। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। এবারো চিনির দাম বাড়িয়ে দেয়া হলো। আর চাল-তেলের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন চাল-চিনি-ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে