বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেচ এলাকা বেড়েছে ১০ লাখ হেক্টর

কৃষকস্বার্থ সংরক্ষণ করুন
নতুনধারা
  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির ফলে গত দশ বছরে সেচ এলাকা সম্প্রসারণ হয়েছে ১০ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে খাল পুনর্খনন করা হয়েছে ৯ হাজার ৪৫৭ কিলোমিটার, সেচনালা স্থাপন করা হয়েছে ১৩ হাজার ৩৫১ কিলোমিটার এবং ১০টি রাবার ড্যাম ও একটি হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে।

এর ফলে ৫৬ লাখ ২৭ হাজার হেক্টরে সেচ এলাকায় দক্ষতা ৩৫ শতাংশ থেকে ৩৮ শতাংশ এবং ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার ২১ শতাংশ থেকে ২৭ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। আর সারাদেশের সেচযোগ্য জমির ৭৩ শতাংশ সেচের আওতায় এসেছে। পানির টেকসই ব্যবহার ও পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। নদী-খাল খনন ও পুনর্খনন, রাবার ড্যাম, জলাধার নির্মাণ, পানি সাশ্রয়ী পদ্ধতির ব্যবহারসহ অনেক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে। এর ফলে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

আমরা মনে করি কেবল সেচ এলাকা বাড়ালেই হবে না, খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। রক্ষা করতে হবে কৃষকস্বার্থ। কারণ কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আশার কথা, ইতিমধ্যে ফসল উৎপাদনে সেচের খরচ অনেক কমেছে। প্রসঙ্গত, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পানির টেকসই ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯৬৭-৬৮ সালে বিএডিসি প্রাথমিক পর্যায়ে কন্ট্রাক গ্যাজের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পরিমাপ কার্যক্রম শুরু করে। সম্প্রতি 'ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়নে জরিপ ও পরিবীক্ষণ ডিজিটালাইজেশনকরণ প্রকল্প'-এর আওতায় প্রতিটি উপজেলায় একটি করে অর্থাৎ ৪৬টি ওয়াটার লেভেল ডেটা লগার স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানির অবস্থানচিত্র তৈরি ও সময়ে সময়ে তা হালনাগাদ করা হচ্ছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাকালে সরকার কৃষির ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ করোনা মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। ইতিমধ্যে সরকার চাল আমদানি শুরু করেছে। এটা শুভ লক্ষণ নয়।

এর আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কৃষকদের বাঁচানোর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে শস্যবিমা চালুর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সরকারের গবাদিপশু বিমা চালু করারও পরিকল্পনা আছে। অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্রে স্থানীয় ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া এবং ফসল মাড়াই যন্ত্রের কর কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকার প্রতি বছর কৃষি খাতে সার, সেচ ও বিদু্যতে ভর্তুকি, নগদ সহায়তা ও প্রণোদনা হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে। ব্যয়িত অর্থের সিংহভাগই খরচ হয় প্রভাবশালী ও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বড় কৃষকদের পেছনে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক সব সময় সরকারের এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। থাকেন উপেক্ষিত। দেখা গেছে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরাই পারিবারিক শ্রম ও নিজস্ব মেধা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কৃষিকে। এসব ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সরকারি ভর্তুকি ও প্রণোদনার সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের প্ররিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে কৃষকস্বার্থ সংরক্ষণ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে