রোধে কার্যকর উদ্যোগ নিন

বায়ুদূষণ

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের শিকার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে বাংলাদেশ। ফলে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছেন এবং নানান রোগে ভুগছেন। দেশে করোনা সংক্রমণের পর কারখানা, দোকানপাট, যানবাহন বন্ধ থাকায় এবং মানুষ ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করলে ঢাকাসহ সারাদেশের বায়ুদূষণ কমতে থাকে। একপর্যায়ে দেশের বায়ু স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে আসে। তবে সম্প্রতি জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হওয়াতে দূষণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। বায়ুর মানদন্ডে সারা বিশ্বের মধ্যে ঢাকা খুব বাজে অবস্থানে আছে। বৈশ্বিকর্ যাঙ্কিংয়ে কখনো প্রথম, কখনো দ্বিতীয় অবস্থানে থাকছে ঢাকা।র্ যাঙ্কিংয়ে পালস্না দিচ্ছে পাকিস্তানের সঙ্গে। বায়ুর দূষিত অবস্থা সহনীয় মাত্রার চেয়ে কখনো কখনো সাড়ে ছয় গুণ ছাড়িয়ে যায়। বিশ্বের বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজু্যয়ালের পর্যবেক্ষণ (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) অনুযায়ী, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর বায়ুর মান ছিল ২৩৫, যাকে বায়ুমান সূচকে অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। বায়ুদূষণের দিক থেকে এখন বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। দিনভর প্রথম অবস্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর, তৃতীয় অবস্থানে ভারতের দিলিস্ন। চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে ছিল ভিয়েতনামের হেনয় শহর। \হবায়ুদূষণ এখন রীতিমতো নাগরিক বিড়ম্বনা ও আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বায়ুদূষণ মানব জীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বায়ুদূষণের ফলে একদিকে পরিবেশ যেমন বিনষ্ট হয় তেমনি প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যায়। বায়ুদূষণ থেকে রক্ষার জন্য অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করে থাকেন। যদিও করোনাকালে প্রায় সবাই মাস্ক ব্যবহার করছে। কিন্তু এটাই একমাত্র সমাধান নয়। মূলত বায়ুদূষণ রোধ করতে হবে। বায়ুদূষণের ফলে মানবদেহে জন্ম নেয় অনিরাময়যোগ্য নানা রোগ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের ফলে মানুষের শ্বাসযন্ত্র, হৃদরোগ, ক্যানসার ও ডায়াবেটিস বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়। এ ছাড়া বাযুদূষণ মাতৃগর্ভে ভ্রূণের ক্ষতিসাধনসহ শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকাশ ব্যাহত করে। মনে রাখতে হবে, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, মিলকারখানা ইটভাটার কালো ধোঁয়া বায়ুদূষণের প্রধান নিয়ামক। কীভাবে এসব বন্ধ করা যায় এবং মানুষ মুক্তবায়ু সেবন করতে পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। অনেক সময় ধূলি নোংরা আবর্জনাও বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র যদি এদিকে বিশেষ মনোযোগী না হয় তা হলে জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারও এর দায় এড়াতে পারে না। যারা বায়ুদূষণের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা জনস্বাস্থ্যঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে। একুশ শতকে বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট এক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বায়ুদূষণ রোধ করতে হবে। এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া যায় তা হলে ভবিষ্যতের জন্য বড় ধরনের বিপদ হিসেবে দেখা দেবে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন।